সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেশ কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে মুম্বইয়ে। যার জেরে বাণিজ্যনগরীর অর্ধেকেরও বেশি এলাকা জলমগ্ন। এর উপর আবার বিষফোঁড়ার মতো ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। তাই আজ, সোমবার শহরের সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। রবিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় তারা। এছাড়া বিএমসির তরফে মুম্বইবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে কেউ যেন সমুদ্রের আশপাশে না যায়। আগামী দু’দিন সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
[ আরও পড়ুন: কাশ্মীরে জইশ জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের খবরে জারি চরম সতর্কতা ]
বৃষ্টি ও বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ফলে দেশের বাণিজ্যনগরী এখন বিপর্যস্ত। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে ডিরেক্টর কে এস হোসালিকর জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মুম্বইয়ে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। থানে ও নবি মুম্বইয়ে বৃষ্টি হয়েছে ২৫০ মিলিমিটারেরও বেশি। মুম্বই, পুনে ও পালঘর জেলায় ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। একজন নিখোঁজ। পালঘরে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ১৬ বছরের এক কিশোর। তার সন্ধান চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। নাসিকে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে গোদাবরী নদী। মধ্য রেলের তরফে রবিবার জানানো হয়েছে, প্রবল বৃষ্টি ও জল জমে থাকার কারণে ছ’টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ছ’টি অন্য রুটে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রেললাইনে গাছ উপড়ে পড়ার জন্য বাতিল করতে হয়েছে ১৮টি ট্রেন। একাধিক স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে।
রবিবার সকাল ১১টায় পুণেতে ৩৫ হাজার ৫৭৪ কিউসেক জল ছাড়া হয় খাদাকোয়াসলা বাঁধ থেকে। পরে এদিনই দুপুর তিনটেয় আরও ৪১ হাজার ৭৫৬ কিউসেক জল ছাড়া হয়। এলাকায় মোট চারটি বাঁধ রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে যদি বাঁধ থেকে আরও জল ছাড়া হয়, সেক্ষেত্রে বহু গ্রাম জলের তলায় চলে যাবে। নিচু এলাকাগুলি থেকে তখন প্রচুর লোককে সরে যেতে হবে নিরাপদ জায়গায়।
[ আরও পড়ুন: ‘রাস্তায় পশুহত্যা করবেন না’, বকরি ইদের আগে মুসলিমদের পরামর্শ মৌলানার ]
পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে রবিবার রাজ্য সরকারকে বায়ুসেনার কপ্টারের সাহায্যও নিতে হয়েছে। থানের জলবন্দি গ্রামগুলি থেকে তুলে আনা হয়েছে ৫৮ জনকে। এর মধ্যে আবার ১৬ জনই শিশু। প্রশাসন জানিয়েছে, থানের কান্দাভলি এলাকার দু’টি গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ওই ৫৮ জনকে। গত দু’দিনের বৃষ্টি ও বন্যায় এঁদের বাড়ির জলের নিচে চলে যায়। বায়ুসেনার এমআই ১৭ কপ্টার এঁদের উদ্ধার করে নিরাপদ এলাকায় পৌঁছে দিয়েছে। নৌবাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে প্রশাসন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বিভিন্ন জলবন্দি এলাকা থেকে এদিন বেশ কয়েকটি পরিবারকে উদ্ধার করেছে।
রাজ্যের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেন, বৃষ্টি এবং সমূদ্রে জলোছ্বাসের কারণে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি মুম্বইকে হতে হয় তার ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই। তবে তাঁর আশা, সব ক’টি পাম্পিং স্টেশন কাজ করতে শুরু করলে, জমা জল পাম্প করে বের করে দেওয়ার পর অনেকটাই স্বাভাবিক হবে রাজ্যের পরিস্থিতি।
The post অতিবর্ষণের সম্ভাবনায় স্তব্ধ বাণিজ্যনগরী, বন্ধ স্কুল-কলেজ appeared first on Sangbad Pratidin.