সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশ (Bangladesh) । কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতির উন্নতি না হলে কোনওভাবেই স্কুল, কলেজ খোলা যাবে না। বৃহস্পতিবার তা স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে আগামী বছরের প্রথম দিকেও বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা বন্দই থাকবে। যদিও পড়ুয়াদের যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য পাঠ্যপুস্তক বিতরণের কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ১ জানুয়ারি থেকে প্রায় সাড়ে চার কোটি পড়ুয়ার হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের প্রাক্-প্রাথমিক, প্রাথমিক স্তর, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। সেখানেই তিনি বলেন, ”সরকার যখনই স্কুলগুলো খোলার বিষয়ে চিন্তা শুরু করল, তখনই করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এল। কাজেই আমাদের ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করেই ১৫ জানুয়ারি অবধি কোনও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে না। এর মধ্যে যদি কোভিড পরিস্থিতি ভাল হয়, তাহলে স্কুল খোলা হবে, না হলে আমরা খুলব না।”
করোনা কালে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি অন্য বই পড়া এবং শরীরচর্চা ও খেলাধুলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা চালিয়ে যাওয়ার জন্যও অভিভাবকদের অনুরোধ করেন তিনি। শেখ হাসিনার আরও বক্তব্য, ‘‘আমি মনে করি, বিভিন্ন ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (জুম, মেসেঞ্জার, ফেসবুক গ্রুপ, ইউটিউব) ব্যবহারের মাধ্যমে ক্লাস রেকর্ডিং করে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কাজেই ঘরে বসে আমাদের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে।”
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বাজেয়াপ্ত চোরাই ইউরেনিয়াম, আণবিক বোমা তৈরির চেষ্টায় জেহাদিরা!]
এদিকে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। ২০২১ শিক্ষাবর্ষে সর্বমোট ৩৪ কোটি ৩৬ লক্ষ ৬২ হাজার ৪১২ পাঠ্যপুস্তক বিনা মূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন কয়েকজন প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীর হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেন। শুক্রবার অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বই বিতরণ শুরু হবে।
[আরও পড়ুন: লন্ডন থেকে এলে কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক, ঘোষণা বাংলাদেশের]
এবার মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশে বইয়ের প্রচ্ছদেও নতুনত্ব আনা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের ব্যাক পেজে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন ছবি ক্যাপশন-সহ সংযোজন করা হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর (২০২০) পর্যন্ত এই ১০ বছরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় ৩৩১ কোটি ৪৭ লক্ষ বই সারা দেশে বিতরণ করা হয়েছে।