shono
Advertisement

Breaking News

Durgapur

পাইপলাইন বা বোতলবন্দি মিনারেল জল নয়, 'প্রাকৃতিক' পানীয় জলের চাহিদা বাড়ছে দুর্গাপুরে

এই পানীয় জল সংগ্রহ করেন ৪টি গ্রামের প্রায় হাজারছয়েক পরিবার।
Published By: Anwesha AdhikaryPosted: 02:46 PM Jul 31, 2025Updated: 02:46 PM Jul 31, 2025

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পাইপলাইনের কিংবা বোতলবন্দি মিনারেল জল ছেড়ে প্রাকৃতিক আর্টেজিয় কূপের জলেই ভরসা। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করেন পাইপলাইনের জল কিংবা বাজার থেকে কেনা বহুজাতিক ছোট বড় কোম্পানির বোতলবন্দি মিনারেল জল। কিন্তু এর ঠিক উলটো চিত্র দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়। সংশ্লিষ্ট এলাকার সিংহভাগ মানুষ পানীয় জল হিসেবে দীর্ঘকাল ধরে স্বাচ্ছন্দে ব্যবহার করেন আর্টেজিয় কূপের জল। বাড়ি বাড়ি 'ভারী'রা এখনও এই জল বিক্রি করেন।

Advertisement

এই কূপ রয়েছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর পঞ্চায়েতের সরপি গ্রামের শেষ প্রান্তে। সেখানে রয়েছে রামসায়ের নামে একটি বিশাল জলাশয়। বহু যুগ ধরে সেই জলাশয়ের আশপাশে কয়েকটি জায়গায় মাটি ফুঁড়ে বের হয় জল। যা বিজ্ঞানের ভাষায় আর্টেজিয় কূপ নামে পরিচিত। যেসব জায়গা থেকে মাটি ফুঁড়ে জল বের হয় আগে সেই সব জায়গায় ছোট ছোট গর্ত তৈরি করে সেখান থেকে জল সংগ্রহ করত এলাকাবাসী। ২০০৬ সালে প্রশাসনের উদ্যোগে সেই কূপ বা জলের উৎসমুখগুলিতে বড় বড় আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভার তৈরি করা হয়। পাশে তৈরি করা হয় ট্যাঙ্কার।

পাইপলাইনের মাধ্যমে আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভার থেকে ট্যাঙ্কারে জল জমা হয়। বর্তমানে সেখান থেকেই এই পানীয় জল সংগ্রহ করেন ইছাপুর, সরপি-সহ ৪টি গ্রামের প্রায় হাজারছয়েক পরিবার। আশপাশ এলাকার দূরত্বের কারণে যাঁরা নিজে এই জল সংগ্রহ করতে পারেন না, তাঁরা সেই জল কিনে খান। এলাকার বহু মানুষ এই জল গ্যালন বন্দি করে টাকার বিনিময়ে পৌঁছে দেন দূরদূরান্তে বাড়ি বাড়ি। নিরঞ্জন ঘোষ, বিশ্বজিৎ কর্মকার'রা বলেন, "সারাদিন বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দিয়ে ৪০০-৫০০ টাকার রোজগার হয় প্রতিদিন।" তাঁদের মতো ৩০-৪০ জন এই জল সরবরাহ করে উপার্জন করেন। এলাকায় গ্যালন প্রতি জল ৮ থেকে ১০ টাকা ও দূরবর্তী এলাকায় সেই জল বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ টাকায়।

এই কূপের জল পানীয় জল হিসাবে নিরাপদ? বিশেষজ্ঞদের দাবি, আর্টেজিয় কূপের জল নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর। এতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফ্লোরাইড খনিজ পদার্থ থাকে। এছাড়াও ভূগর্ভস্থ শিলা বা পাথর এবং কাদামাটির স্তর গুলি আর্টের্জিয় কূপের জলকে প্রাকৃতিকভাবে পরিশ্রবণ ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করে। তাই এই জল জীবাণুমুক্ত ও পরিশুদ্ধ। রামসায়ের প্রাকৃতিক জল ব্যবহারকারীদের বক্তব্য, এখানকার জল সুস্বাদু ও হজমের পক্ষে সহায়ক। অনেকেই এই জল পান করে হজম সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

শুধু বাড়িতে ব্যবহারই নয়, সরপি গ্রামের বাসিন্দারা বলেন এলাকায় বিয়েবাড়ি এবং অনুষ্ঠান বাড়িতে বোতলের জলের পরিবর্তে পানীয় জল হিসেবে তারা রামসায়েরের জল ব্যবহার করেন। দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি স্বাধীন ঘোষ বলেন, "এই জল যাতে আরও বেশি মানুষ ব্যবহার করতে পারে তার জন্যে সমিতি পরিকল্পনা করছে।" এই জল যেমন বহু মানুষের জীবিকা, জীবণধারণে কাজে লাগছে ঠিক তেমনি প্রাকৃতিক এই কূপের জল দেখতে অনেকেই ভিড় জমান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এই কূপ রয়েছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর পঞ্চায়েতের সরপি গ্রামের শেষ প্রান্তে।
  • বিশেষজ্ঞদের দাবি, আর্টেজিয় কূপের জল নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর। এতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফ্লোরাইড খনিজ পদার্থ থাকে।
  • পাইপলাইনের মাধ্যমে আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভার থেকে ট্যাঙ্কারে জল জমা হয়। বর্তমানে সেখান থেকেই এই পানীয় জল সংগ্রহ করেন ইছাপুর, সরপি-সহ ৪টি গ্রামের প্রায় হাজারছয়েক পরিবার।
Advertisement