সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কাই সত্যি হল। ৭০ সেমি ব্যাসের এক গ্রহাণু আছড়ে পড়ল পৃথিবীর বুকে। গতকাল রাতে স্থানীয় সময় ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ রাশিয়ার ইয়াকুতিয়ার আকাশে বিস্ফোরিত হয়েছে সেটি। আবিষ্কারের পর মাত্র কয়েক ঘণ্টাতেই সেটি প্রবেশ করে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে। রাতের আকাশে দেখা যায় দৈত্যাকার আগুনের গোলা। তবে এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর মেলেনি।
জানা গিয়েছে, গ্রহাণুটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক খণ্ডে বিভক্ত হয়ে যায়। রাশিয়ার বনাঞ্চল জুড়ে পাথর ছড়িয়ে পড়ে ছোট ছোট। আকার এবং অবস্থানের কারণেই কোন বড়সড় প্রভাব বা ক্ষতি কিছু হয়নি, এতেই স্বস্তি পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি 2022 WJ, 2023 CX1, এবং 2024 BX1 নামের তিনটি গ্রহাণু একই ভাবে আছড়ে পড়েছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রেও কোনও বিপদ ঘটেনি।
প্রসঙ্গত, এই ধরনের আগন্তুক গ্রহাণু অতীতে বহুবার পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে এবং পৃথিবীর বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রাগৈতিহাসিক কালে পৃথিবীর বুকে রাজত্ব করা ডাইনোসরদের অবলুপ্তির পিছনেও এই ধরনের মহাজাগতিক বস্তুর আছড়ে পড়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে দাবি করেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক অতীতে বহুবারই গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষে মানব সভ্যতা ধ্বংস হওয়ার নানা জল্পনা ও গুজব শোনা গিয়েছে। সাধারণত এই ধরনের গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমই থাকে। যদিও কখনও কখনও অন্য গ্রহের সঙ্গে মহাকর্ষীয় টানের কারণে তারা আচমকাই অনেকটা কাছে চলে আসে। তাই নিয়মিতই এই ধরনের গ্রহাণুর গতিবিধির নিরীক্ষণ করে নাসা। পাশাপাশি গ্রহাণুর পাথুরে শরীর থেকে উপাদান সংগ্রহের চেষ্টাও করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। নাসার পরিকল্পনা রয়েছে পৃথিবীর কাছাকাছি এসে পড়া কোনও গ্রহাণুকে ধাক্কা মেরে সেটির গতি কমিয়ে দেওয়ার। তবে এদিনের গ্রহাণুটির ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব হয়নি। সেটি আবিষ্কারের মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ল আগুনের গোলা হয়ে।