সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর বাইরেও জলের অস্তিত্ব পেতে বিজ্ঞানীরা অনন্তকাল ধরেই গবেষণা চালাচ্ছেন। বৃহস্পতির মতো বেশ কয়েকটি বৃহৎ এবং গ্যাসীয় উপাদানে ভরা গ্রহেও (Giant gas planets) তার সন্ধান চলছে। এবার তা থেকেই কিছুটা আশার আলো দেখা গেল। সম্প্রতি ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ নামে বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত বিখ্যাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। তাতে উল্লেখ রয়েছে, বৃহস্পতির মতো গ্রহের নমুনার রাসায়নিক পরীক্ষা করে যে উপাদানগুলি মিলেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জল (Water) এবং কার্বন মনোক্সাইডের (CO) অণু! এই পর্যবেক্ষণই আশার দিগন্ত খুলে দিয়েছে। তবে কি গ্যাসীয় উপাদানে ভরতি গ্রহের মধ্যেও বাসযোগ্য হওয়া সম্ভব? এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পেতে অবশ্য আরও অনেক দীর্ঘ পথ পেরতে হবে।
বিজ্ঞানী যে গ্রহদের উপর গবেষণা চালিয়েছেন সেগুলোর আয়তন মোটের উপর বৃহস্পতির (Jupiter) এক তৃতীয়াংশ থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, বৃহস্পতি সদৃশ গ্রহগুলির প্রকৃতি বিচার-বিশ্লেষণ করা। যদিও এদের বেশিরভাগই আমাদের সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহ অর্থাৎ বিজ্ঞানের ভাষায় ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ (Exoplanet)। এ ধরনের গ্রহ আসলে আমাদের চেনা নয়। আসলে সৌরজগতের বাইরেটা ঠিক কেমন, তা জানা-বোঝার জন্যই এ ধরনের গ্রহদের উপর গবেষণা। বলা হচ্ছে, ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’র এই গবেষণাপত্র আরও বৃহত্তর জগতের সন্ধান দিতে পারে।
[আরও পড়ুন: এবার চাঁদ, মঙ্গলেও সিনেমার শুটিং! স্পেস স্টেশনে অভিনয়ের পর ঘোষণা রুশ পরিচালকের]
ইউভার্সিটি অফ অ্যারিজোনার একদল বিজ্ঞানী নিজেদের গবেষণার কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন। সেসব বৃহস্পতির মতো গ্যাস ভরতি গ্রহদের আবহাওয়া সংক্রান্ত। এদের তাপমাত্রা বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গবেষকদলের প্রধান বিজ্ঞানী মেগান ম্যানসফিল্ড জানাচ্ছেন, ”এই কাজের জন্য আমরা আণবিক পরীক্ষা করেছি। স্পেকট্রামও ব্যবহার করা হয়েছে। তাতেই আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য কিছু পেয়েছি। এর রাসায়নিক গঠন সম্পর্কেও ধারণা করতে পেরেছি।” তাতেই জল এবং কার্বন মনোক্সাইডের অণুর হদিশ মিলেছে বলে দাবি প্রতিবেদনে।
[আরও পড়ুন: ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে ভেসে এল রহস্যময় তরঙ্গ! চাঞ্চল্য বিজ্ঞানী মহলে]
এও বলা হয়েছে, এক গ্রহ থেকে আরেক গ্রহে জলের শোষণ ক্ষমতার হেরফের হয়। তবে সব গ্রহেরই রাসায়নিক গঠন আলাদা। ম্যানসফিল্ডের কথায়, ”সব একসারিতে নিয়ে আমরা বুঝতে পারছি যে আমাদের সৌরজগতের বাইরে কিছু কিছু বিক্রিয়া ঘটছে, যা বোঝা আমাদের অসাধ্য নয়।” তবে কি বৃহস্পতি এবং তৎসদৃশ গ্রহে অদূর ভবিষ্যতে প্রাণের অস্তিত্বের ইঙ্গিত পাওয়া যাবে?