সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীতের শহরে পরিযায়ী পশুপাখিদের আনাগোনা স্বাভাবিক ব্যাপার। নরম রোদমাখা দুপুরে ঝিলের ধারে কত নতুন পাখপাখালির কলতান যে কানে আসে, তার ঠিক নেই। চেনা সুর যেন হারিয়ে যায় অচেনা স্বরের আড়ালে। তবে ২০২৫ সালে শহরে এই নতুন অতিথিতে চমক! দেখা যাচ্ছে, আশপাশে মথের মতো দেখতে একপ্রকার পতঙ্গ উড়ে বেড়াচ্ছে। তা হলো বাদামি প্রজাপতি। এমন ব্যতিক্রমী প্রজাপতি চোখে পড়েছে অনেকেরই। কেউ কেউ এতে অমঙ্গলের আশঙ্কা দেখছেন। কিন্তু পতঙ্গবিদদের বক্তব্য, এতে অমঙ্গল বা অস্বাভাবিকতার কিছু নেই। সারাবছর ধরে যেমন আবহাওয়া ছিল কলকাতায়, তা বাদামি প্রজাপতিদের অবাধ বিচরণের জন্য একেবারে আদর্শ।
কমন ইভিনিং ব্রাউন।
পোশাকি নাম - কমন ইভিনিং ব্রাউন। গাত্রবর্ণের জন্যই সম্ভবত এমন নাম বাদামি প্রজাপতিদের। কয়েক মিলিগ্রাম ওজনের এই প্রজাপতির ডানা আড়াই থেকে ৩ ইঞ্চি চওড়া। সাধারণ প্রজাপতিদের থেকে এদের চরিত্র খানিকটা আলাদা। আকারে খুব বড় নয়। সাধারণত রোদেলা আবহাওয়ায় প্রজাপতি থাকতে ভালোবাসে। কিন্তু বাদামি প্রজাপতির পছন্দ পৃথক। বেশি রোদে নয়, এরা পছন্দ করে স্যাঁতস্যাঁতে আর্দ্র আবহাওয়া। হয়তো সেই কারণে তাদের ডানায় রং ফোটেনি, ধূসর বাদামি রয়ে গিয়েছে। বছরের বেশিরভাগ সময় থাকে মাটির সঙ্গে মিশে, যাতে নিজেদের পছন্দমতো পরিবেশ পায়। সেই কারণেই সারাবছর ধরে বিশেষ দেখা যায় না কমন ইভিনিং ব্রাউন গোত্রের প্রজাপতিদের। এবছর কেন প্রকৃতির মাঝে তাদের এত আনাগোনা? তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন পতঙ্গ বিশেষজ্ঞরা।
পতঙ্গবিদদের মতে, ২০২৫ সাল দীর্ঘ বর্ষা মরশুমের সাক্ষী। বছরের বেশিরভাগ সময়ে বৃষ্টিতে ভিজেছে কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ। যার জেরে আবহাওয়া এমনিতেই আর্দ্র। শীতের শুষ্কতা শুরু হলেও আপেক্ষিক আর্দ্রতা এখনও বেশ বেশি। ফলে আদর্শ পরিবেশ পেয়ে হু হু করে তারা গোপন ডেরা ছেড়ে বেরিয়ে আসছে। আর চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তরফে ডিরেক্টর জানিয়েছেন, বাদামি প্রজাপতির গোটা জীবনচক্র মাত্র ২ সপ্তাহ। এর মধ্যে ডিম পাড়া, লার্ভা বা শুঁয়োপোকা, পিউপা হয়ে নতুন প্রজাপতির জন্ম নেওয়া সম্ভব যদি আবহাওয়া এমনই থাকে। তবে এর সঙ্গে কোনও অমঙ্গলের সম্পর্ক নেই।
