সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি বছরে বারবার বন্যার কবলে পড়েছে ভারত। হড়পা বান, ধস, অতিবৃষ্টির মতো নানা কারণে বহু প্রাণহানির সাক্ষী থেকেছে উত্তরের রাজ্যগুলি। কেবল ভারত নয়, পড়শি দেশ পাকিস্তান এবং চিনেও বন্যার জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, কেন এত বেশিবার বন্যার কবলে পড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি?
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানে বন্যায় ৮০০জনের মৃত্যু হয়েছে। আগামী দিনেও বন্যা সতর্কতা জারি রয়েছে সেদেশে। অন্যদিকে, বুধবারই মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বৈষ্ণোদেবীতে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার এমন ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীরের মতো জায়গাগুলি। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে একাধিক নদী। গঙ্গা, চেনাবের মতো নদীগুলির উপকূলবর্তী এলাকায় বিপাকে আমজনতা। চিনে গত দু'মাস ধরে প্রবল বৃষ্টির জেরে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, প্রত্যেক বছর বর্ষাকালেই বৃষ্টি হয় এই দেশগুলিতে। কিন্তু চলতি বছরে কেন এত বেশি বৃষ্টি হল? কেন বারবার বন্যার কবলে পড়ল বিস্তীর্ণ এলাকা? এর জন্য উষ্ণতা বেড়ে যাওয়াকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এই দেশগুলি ক্রমেই উষ্ণ হয়ে উঠছে। তার ফলে হিমালয়ের মতো পর্বতগুলিতে জমে থাকা বরফ গলছে এবং বাষ্পীভূত হচ্ছে। সেই বাষ্প থেকে মেঘ তৈরি হয়ে স্বাভাবিক নিয়মে বৃষ্টি হচ্ছে। যেহেতু বিরাট পরিমাণে বরফ গলছে, তাই মেঘ তৈরির পরিমাণও বাড়ছে।
শুধু বরফ গলাই নয়, নদীর জলও আগের থেকে অনেক বেশি পরিমাণে বাষ্পীভূত হচ্ছে। তার ফলে একদিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ছে, তার জেরে নদীতে জলস্তর বাড়ছে। বিপদসীমা পেরিয়ে বইছে নদীপগুলি। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, বনভূমি কেটে ফেলা, শহর গড়ে তোলার জেরেই বৃষ্টিপাতের পরিমাণে ব্যাপক তারতম্য হচ্ছে, যা বাড়তে পারে আগামী দিনেও। তবে বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত থাকলে প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব, মত বিশ্লেষকদের।
