shono
Advertisement

Breaking News

North Bengal

কমছে চলাচলের করিডর! নিরাপত্তার অভাবে কি লোকালয়ে হানা দিচ্ছে উত্তরের হাতির দল?

বিভিন্ন বনবস্তিতে সতর্কতামূলক প্রচার শুরু হয়েছে।
Published By: Suhrid DasPosted: 06:00 PM Oct 29, 2025Updated: 06:00 PM Oct 29, 2025

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: হড়পা বানের আতঙ্ক থেকে বেড়ে চলা নিরাপত্তার অভাববোধেই কি উত্তরের দলছুট বুনো হাতিরা বেশি মারমুখী হয়েছে? নাকি করিডর দখলের জন্য চলাচলে প্রতি পদে বাধা ও খাদ্যাভ্যাস পালটে যাওয়ায় চেপে বসেছে 'দাদাগিরি' স্বভাব! হড়পা বানের পর থেকে উত্তরে বুনো হাতির তাণ্ডব বেড়ে চলায় ওই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এদিকে দলছুটদের দৌরাত্ম্য বেড়ে চলায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তার ভাজ পড়েছে বনকর্তাদের কপালে।

Advertisement

প্রবল বর্ষণের জেরে ৪ অক্টোবর রাত থেকে হড়পা বানে লণ্ডভণ্ড হয় উত্তরের সমতলের দুই জেলা জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার। বনাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা পলি ও ডলোমাইটের আস্তরণে তলিয়ে যায়। শুরু হয় দিশাহারা বুনো হাতিদের খাবার ও জলের খোঁজে লোকালয়ে অভিযান। বেড়ে চলে বানভাসি হাতি ও মানুষের সংঘাত। চলতি মাসে হাতির হামলায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও উত্তরবঙ্গে বিপর্যয় হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো বুনো হাতিদের আচরণ দেখা যায়নি। কেন এমন পরিস্থিতি?

পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসু বলেন, "এখন করিডর বলে কিছু নেই। হাতির চলাচলের পথ অনেক সঙ্কুচিত। ওই কারণে ওরা মারদাঙ্গা করে হাতিরা জায়গা খুঁজে নিতে বাধ্য হচ্ছে।" অনিমেষবাবুর বক্তব্য যে অমূলক নয় স্বীকার করছেন নিচুতলার বনকর্মীরা।  তারা জানান, ভারত-নেপাল সীমান্তের মেচি নদী থেকে অসম সংলগ্ন সংকোশ নদী পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের 'এলিফেন্ট রেঞ্জ'। ওই রেঞ্জের উত্তরে ভুটান,পশ্চিমে নেপাল এবং দক্ষিণে বাংলাদেশ। এখানে রয়েছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প, জলদাপাড়া, গরুমারা, চাপরামারি, নেওরাভ্যালি ও মহানন্দা জঙ্গলের ১ হাজার ২৮৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা। এটাই উত্তরের বুনো হাতিদের বিচরণ ক্ষেত্র। এখন এখানে সাত শতাধিক হাতির বসবাস।  কিন্তু নিজেদের বসতি এলাকায় ওরা যে স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতে পারছে তেমন নয়।

অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বসতি এলাকার সম্প্রসারণ, সড়ক নির্মাণ, বেড়ে চলা ছোট চা বাগান হাতির বিচরণ ক্ষেত্রকে টুকরো পকেটে পরিণত করে ছেড়েছে। ফলে বুনো হাতিরা সহজে এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে যাতায়াত করতে পারছে না। হড়পা বানের জলে আটকা পড়ে বুনোরা এমনিতেই দিশাহারা হয়েছে। এরপর এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে চলাচলের পথে বাধা পেয়ে মারমুখী হয়ে উঠছে। লাটাগুড়ির বাসিন্দা বন্যপ্রাণপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার বলেন, "হড়পা বানে জঙ্গলের তৃণভূমি, জলাশয় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই কারণে বুনোরা এলাকা পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে। কিন্তু বসতি এলাকা সম্প্রসারণের ফলে সেটা সহজে সম্ভব হয়নি। ওই কারণে বুনোরা ক্ষেপে হামলা চালাতে শুরু করেছে।" বনদপ্তরের সূত্রে জানা গিয়েছে, হড়পা বানের পর বুনো হাতির উপদ্রব সবচেয়ে বেশি একদিকে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ও মাদারিহাটে। অন্যদিকে জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার, মেটেলি, বানারহাট ও নাগরাকাটা এলাকায়।

এদিকে মারকুটে দলছুট হাতিদের আনাগোনা বেড়ে চলায় বনদপ্তরের তরফে জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন বনবস্তিতে সতর্কতামূলক প্রচার শুরু হয়েছে। পর্যটকদের জঙ্গল সাফারির সময় জিপসিচালক ও গাইডদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। হাতি দেখলে সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়া এবং সেই রাস্তা ব্যবহার না করতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকরা যেন কোনওভাবে হাতি দেখে উত্তেজিত না হয়, তাও লক্ষ্য রাখতে রাখতে বলা হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • হড়পা বানের আতঙ্ক থেকে বেড়ে চলা নিরাপত্তার অভাববোধেই কি উত্তরের দলছুট বুনো হাতিরা বেশি মারমুখী হয়েছে?
  • নাকি করিডর দখলের জন্য চলাচলে প্রতি পদে বাধা ও খাদ্যাভ্যাস পালটে যাওয়ায় চেপে বসেছে 'দাদাগিরি' স্বভাব!
Advertisement