সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যাহ্নভোজ থেকে নৈশভোজ, অন্তত অল্পবিস্তর স্ন্যাকস - এসবই বিমানযাত্রার অঙ্গাঙ্গী অংশ। অথচ বিমানে অনেকেই খাবার খেতে পারেন না। নষ্ট হয় প্রচুর খাদ্য। তা নিছকই লোকসানের তালিকায় না ফেলে এবার কাজে লাগানোয় বড় উদ্যোগ বিজ্ঞানীদের। ওই নষ্ট খাবারকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলে তা জ্বালানি রূপে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই কাজে নেমেছে আমেরিকার ইলিনয়ের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল। তাদের লক্ষ্য, ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বনমুক্ত উড়ান পরিষেবা চালু করার। এই পদ্ধতি চালু হলে বিমান চলাচলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা একেবারে শূন্যে নেমে যাবে।
সম্প্রতি 'নেচার কমিউনিকেশন' পত্রিকায় এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। তাতেই বাণিজ্যিক বিমান পরিষেবার কারণে বাতাসে প্রচুর পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানো নিয়ে তত্ত্ব জনসমক্ষে আনা হয়েছে। বিমানে যে ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করা হয়, তা পুড়লে কার্বন মেশে বায়ুতে। এখন জ্বালানির ধরন বদলে দেওয়া গেলে, এই বিপদ থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ও কৃষিবিজ্ঞানের অধ্যাপক ইউয়ানহুই ঝ্যাং জানিয়েছেন, তাঁদের প্রচেষ্টা সফল হলে বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং দুটি বিভাগেই যুগান্তকারী বদল আসবে। নতুন করে ভাবতে হবে উড়ান সংস্থাগুলিকে। তখন দূষণমুক্ত পরিবেশে বিমান পরিবহণ অনেক সস্তাও হবে বলে পূর্বাভাস বিজ্ঞানীদের।
কিন্তু কী এমন পদ্ধতি, যার জন্য এত বদলের আশা দেখছেন? প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, বিমানে নষ্ট হওয়া খাবারকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানিতে বদলে ফেলা হবে। এখন যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হয়, তাতে যথেষ্ট পরিমাণ বায়ুদূষণ ঘটে। এবার টার্গেট শূন্য শতাংশ কার্বন নিঃসরণ। তার জন্য যে প্রযুক্তি প্রয়োগ করা যেতে পারে, তা হল হাইড্রোথার্মাল লিকুইফ্যাকশন (HTL)। যে পদ্ধতিতে হাইড্রোজেন ও সমগোত্রীয় অনুঘটক ব্যবহার করে জৈব বর্জ্য বদলে ফেলা যায় জ্বালানিতে। বাদ দেওয়া হয় নাইট্রোজেন, সালফারের মতো পদার্থের অবশিষ্ট। তৈরি হয় জৈব জ্বালানি। এধরনের জ্বালানি উচ্চ অক্ষাংশের এলাকায় কাজ করতে সক্ষম। সেই কারণে বিমান চলাচলে এই জ্বালানি ব্যবহার হতে পারে। বিস্তৃত ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি প্রয়োগে সাফল্য এলে আগামী দিনে উড়ান পরিষেবায় বড়সড় পরিবর্তন হবে বলে আশা গবেষকদলের।
