সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাশূন্যে দিনরাত কত কী মহাজাগতিক ঘটনা ঘটে চলেছে, তার হদিশ নেই। তার বেশিরভাগই বিজ্ঞানীদের নজরের বাইরে। তবু ইদানীং প্রযুক্তি আর নিত্যনতুন যন্ত্র উদ্ভাবনে মহাকাশের 'জাদু' ধরা দেয়। তেমনই এক ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এল। বিজ্ঞানীরা জানালেন, আমাদের সৌরজগতের বাইরে একটা বিরাট বিস্ফোরণ ঘটে গিয়েছে। আর তার শক্তি এতটাই যে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সর্বোচ্চ স্তর রীতিমতো টলে গিয়েছে। চৌম্বক ক্ষেত্রে বড়সড় প্রভাব পড়েছে এর জেরে। এখন বিস্ফোরণ সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তথ্য বিশ্লেষণ করে বিপদ কতটা গভীর, তার আঁচ পাওয়ার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।
আমাদের পৃথিবী থেকে ৫০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত নক্ষত্রপুঞ্জ স্যাজিটারিয়াস। তারই একটা নক্ষত্র SGR 1806-20. বলা হচ্ছে, সেখানেই দৈত্যের দাপাদাপি চলছে। বিরাট বিস্ফোরণ ঘটেছে। তা থেকে নির্গত অতিচৌম্বকীয় শক্তির প্রভাব এসে পড়েছে পৃথিবীতে। তা নজরে আসার পর পরীক্ষানিরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক মাইক্রোসেকেন্ডের জন্য এই বিস্ফোরণের জেরে নির্গত আলো নাকি পৃথিবীকে ধাঁধিয়ে দিয়েছিল।
এখনও পর্যন্ত এটা সৌরজগতের বাইরে সবচেয়ে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, তা জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বিস্ফোরণের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলছেন, পূর্ণিমার চাঁদের যে আলো, কয়েক মাইক্রোসেকেন্ডের জন্য ততটা আলোকিত হয়েছিল পৃথিবী। আর শক্তির হিসেব করতে গিয়ে তাঁদের রীতিমতো চোখ কপালে! দেড় লক্ষ বছরে সূর্য যে পরিমাণ শক্তি দেয়, তার চেয়েও বেশি শক্তি নির্গত হয়েছে ওই নক্ষত্রে বিস্ফোরণের ফলে। গামা রশ্মিতে বায়ুমণ্ডলে প্রচুর আয়ন তৈরি হয়েছে।
আমেরিকার লস অ্যালামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী ডক্টর ডেভিড পালমারের কথায়, ''এটা এমন একটা ঘটনা, যা একজীবনে একবারই প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পান জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তবে আমি এরকম দুটি ঘটনা দেখলাম। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরেও আমাদের ছায়াপথ থেকে এমন বড়সড় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। টেলিস্কোপের মাধ্যমে তা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।'' SGR 1806-20 নক্ষত্রকে পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, একটা সময় পৃথিবী থেকে প্রাণীদের বিলুপ্তির কারণ এই নক্ষত্র। ১০ আলোকবর্ষ পরপর এখানে এমন বিস্ফোরণ পৃথিবীর ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত করে সর্বনাশা কাণ্ড ঘটিয়েছে। তাই এবারের বিস্ফোরণ কতটা প্রভাব ফেলবে, সেদিকে অবশ্যই নজর বিজ্ঞানীমহলের।
