সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১১ বছর ধরে নানা কাজ করেছে। অবশেষে আয়ুষ্কাল ফুরল মঙ্গল গ্রহে নাসার পাঠানো মহাকাশযানের। ৬ ডিসেম্বর থেকে আর সাড়া দিচ্ছে না 'মাভেন' অর্থাৎ মার্স অ্যাটমোস্ফিয়ার অ্যান্ড ভোলাটাইল এভোলিউশন। দিন তিনেক পরীক্ষানিরীক্ষার পর নাসা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। হতোদ্যম হয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরাও। তাঁদের আশঙ্কা, এমন আচমকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এতদিনের সমস্ত তথ্য হারিয়ে যেতে পারে। আর তেমনটা হলে মঙ্গল সংক্রান্ত গবেষণায় বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
২০১৪ সাল। প্রতিবেশী লালগ্রহ সম্পর্কে জানতে অনেকটা প্রাথমিক স্তরে কাজ করার জন্য নাসা পাঠিয়েছিল একটি মহাকাশযানকে। 'মাভেন' নামে ওই মহাকাশযানের মূল কাজ ছিল, মঙ্গলের উপরিতলের আবহাওয়া নিরীক্ষণ এবং এই গ্রহের উপর সৌরঝড়ের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য নেওয়া। এ থেকে বোঝা সম্ভব যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা হেরফেরের মাধ্যমে কীভাবে একটি গ্রহ উষ্ণ বা শীতল হতে পারে। এতদিন ধরে সেই কাজই করছিল মাভেনের অরবিটার। লালগ্রহ সম্পর্কে তার দেওয়া তথ্য থেকে বিজ্ঞানীরা ধীরে ধীরে বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার বিবর্তনের ইতিহাস লিখনের কাজ করছিলেন।
কিন্তু ৬ ডিসেম্বর থেকে অকস্মাৎ সব স্তব্ধ! লালগ্রহের নাসার গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে আর কোনও সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে ৯ ডিসেম্বর নাসার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, 'নাসার মাভেন মহাকাশযান, যা মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছিল, তার সঙ্গে গ্রাউন্ড স্টেশনের আর কোনও সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছে না ৬ ডিসেম্বর থেকে। যদিও তার ঠিক আগে পর্যন্ত মাভেনের সমস্ত অংশ বেশ ভালোভাবে কাজ করছিল। মঙ্গলের পিছনের অংশ থেকেই আর তার সঙ্গে নাসার ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক কোনও সংযোগ স্থাপন করতে পারছে না। কেন এমন একটা সমস্যা হল, তা তদন্ত করে দেখছে মহাকাশযান ও তার অপারেশনের দায়িত্বে থাকা টিম।'
যদিও এই মুহূর্তে মঙ্গলে নাসার পাঠানো আরও দুটি অরবিটার কাজ করছে। একটি মার্স রিকনিসেন্স অরবিটার বা MRO, অন্যটি মার্স ওডিসি। তাদের কাজ মূলত মঙ্গল অভিযানের জন্য জরুরি সমস্ত তথ্য পাঠানো। এর মধ্যে মার্স ওডিসি সবচেয়ে পুরনো। ২০০১ সালে তাকে পাঠানো হয়েছিল মঙ্গলের ভৌগলিক এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য পেতে।
