সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিউরিওসিটি রোভারকে মনে আছে? নাসার পাঠানো এই রোবট রোভারটি দীর্ঘদিন ধরে লালগ্রহের বুকে প্রাণের সন্ধান করে চলেছে। অবশেষে যেন আশার আলো দেখছেন নাসা বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, মঙ্গলগ্রহে সবচেয়ে বড় জৈব যৌগ আবিষ্কার করেছে কিউরিওসিটি রোভার। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে হয়ত কোনও এক সময় হয়ত মঙ্গলগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল। লাল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের সরাসরি প্রমাণ না মিললেও বিরাট এই আবিষ্কারে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিশ্বের বিজ্ঞান মহলে।

নাসার তরফে জানা যাচ্ছে, এই জৈব যৌগগুলি ৩.৭ বিলিয়ন বছর পুরনো একটি শিলার নমুনায় পাওয়া গিয়েছে। এই শিলা মঙ্গল গ্রহের ইয়েলোফায়েন বেই অঞ্চলের প্রাচীন একটি সম্ভাব্য জলাশয়ের তলদেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই অঞ্চলে একসময় উষ্ণ ও আর্দ্র পরিবেশ ছিল, যা প্রাণের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান ধারণ করত।
মঙ্গলগ্রহে রোভার হদিশ পেয়েছে ডেকেন অর্থাৎ অ্যালকেন হাইড্রোকার্বনের। এটি জলে দ্রবীভূত হয় না। খোঁজ মিলেছে ১১টি কার্বন পরমাণুযুক্ত হাইড্রোকার্বনের। এই সব অ্যালকেন ফ্যাটি অ্যাসিডের খণ্ড। এই অর্গানিক মলিকিউলগুলি পৃথিবীতে প্রাণসৃষ্টির অন্যতম উপাদান কেমিক্যাল বিল্ডিং ব্লক। যদিও মঙ্গলে প্রাণের কোনও সরাসরি প্রমাণ পাননি গবেষকেরা।
তবে এক বিশেষজ্ঞের মতে, বিজ্ঞানীদের কাছে এটি মঙ্গলগ্রহে জীবনের উপস্থিতি সম্পর্কে এখন পর্যন্ত পাওয়া সব চেয়ে সম্ভাবনাময় প্রমাণ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। ফ্রান্সের গায়ানকোর্ট অ্যাটমসফিয়ারস অ্যান্ড স্পেস অবজারভেশনস ল্যাবরেটরিতে মঙ্গলের শিলাটি সম্পর্কে গবেষণা করা হয়। রসায়নবিদ ক্যারোলিন ফ্রেইসিনেট এই আবিষ্কার প্রসঙ্গে বলেন, “এই যৌগগুলি রাসায়নিক বা জীব বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হতে পারে। যদি মঙ্গলগ্রহে দীর্ঘ শৃঙ্খলযুক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়, তবে তা কোষের ঝিল্লির ক্ষয়ের অবশিষ্টাংশ হতে পারে। এটি সম্ভবত ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন বছর আগে ছিল।”