সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ওই মহাসিন্ধুর ওপার থেকে কী সংগীত ভেসে আসে…’ – দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, মান্না দে জুটির এই অবিস্মরণীয় গানটি নিশ্চয় মাঝেমধ্যেই গুনগুন করে গেয়ে ওঠেন? এবার এই গানের কথাগুলো সামান্য পালটে ফেললে মহাকাশ বিজ্ঞানের (Space Science) কূট, জটিল অনেক রহস্যই হয়ত ভেদ করা সম্ভব হবে। ধরুন যদি আমরা জানতে চাই, ওই ছায়াপথের (Galaxy) ওধার থেকে কী সংকেত ভেসে আসে? তবেই তো অনুসন্ধান, গবেষণা আর উত্তর। সেই উত্তরের খোঁজে এতদিন ধরে কাজ করে চলেছেন বিশ্বের তাবড় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। চেষ্টার সুফলও মিলল। এই প্রথম ৯০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরের এক ছায়াপথ থেকে রেডিও তরঙ্গ পেলেন কানাডার একদল বিজ্ঞানী এবং ভারতে বসানো রাক্ষুসে টেলিস্কোপের সাহায্যে তা মিলেছে।
এলিয়েন (Allien) নিয়ে আমাদের কৌতুহলের শেষ নেই। ভিনগ্রহীদের সঙ্গে বিশ্ববাসীর যোগাযোগ স্থাপন নিয়েও উৎসাহ তুঙ্গে আমজনতা থেকে বিজ্ঞানী, সকলের। তাই ৯০০ কোটি আলোকবর্ষ (Light years) থেকে দূরে আসা তরঙ্গকে যন্ত্রের মাধ্যমে বন্দি করার খবর প্রথমে এলিয়েনদের বার্তা নিয়ে জল্পনা আরও উসকে দেয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা মনে করিয়ে দেন, কোনও এলিয়েন নয়, পৃথিবীর নিকটবর্তী ছায়াপথ থেকে যে সংকেত আসছে, মনে রাখতে হবে তা আসলে অনেক অনেক আগে সেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। এতদিন পর পৃথিবীতে এসে পৌঁছচ্ছে।
[আরও পড়ুন: তালিবানের পতাকার সঙ্গে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিদের ছবি! তুঙ্গে বিতর্ক]
SDSSJ0826+5630 নামের যে ছায়াপথের তরঙ্গ থেকে সংকেত পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তা ১৩৭০ কোটি বছরের পুরনো বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এতটা দূরত্বের ছায়াপথ থেকে এই প্রথমবার তরঙ্গ পাওয়া গেল। মহাজাগতিক বিষয় নিয়ে গবেষণা করা বাঙালি বিজ্ঞানী অয়ন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ”এতদিন আমরা কাছের কোনও ছায়াপথ থেকে রেডিও সিগন্যাল পেয়েছি। ছায়াপথ তো অনেক ধরনের সিগন্যাল দেয়। তবে এবারই প্রথম ৯০০ কোটি আলোকবর্ষ দূর থেকে তরঙ্গে মিলল।”
[আরও পড়ুন: ‘সংবিধানের মূল কাঠামো আমাদের কাছে ধ্রুবতারার মতো’, ধনকড়কে নিঃশব্দ বার্তা প্রধান বিচারপতির]
রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির তরফে SDSSJ0826+5630 ছায়াপথ থেকে যে সিগন্যাল মিলেছে, তা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, সেটি তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ, যাকে হাইড্রোজেন লাইন বলা হচ্ছে। তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ১৪২০-এর কাছাকাছি। এর বেশি এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। সে তো ধীরে ধীরে জানাই যাবে। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, এত দূরের ছায়াপথ থেকে তরঙ্গ পাওয়া মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে খুব বড় সাফল্য বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।