সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘সময় চলিয়া যায়, নদীর স্রোতের প্রায়’। যোগীন্দ্রনাথ সরকারের কিংবদন্তি ছড়ার লাইনটি মানুষের আয়ুষ্কালের ক্ষেত্রে সত্যি হলেও ব্রহ্মাণ্ডের চলনকে ফিরে দেখার উপায় রয়েছে। আলোই সেই অতীতের দূত। সহজে বললে, সুদূর অতীতের ঘটনার প্রতিফলন আলো বয়ে আনে। তা দেখতে হলে লাগে মহা শক্তিশালী টেলিস্কোপ। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাবান টেলিস্কোপ হাবল স্পেস টেলিস্কোপ (Hubble Telescope) বহু ব্ল্যাক হোল, নেবুলা কিংবা ব্র্হ্মাণ্ডের দূর দূর প্রান্ত পর্যন্ত নজরদারি করতে পারলেও আজও অধরা তারাদের জন্ম। ‘বিগ ব্যাং’ (Big Bang) বা যে মহা বিস্ফোরণে ব্রহ্মাণ্ডের সূচনা, সেই মুহূর্তের পরই ক্রমে শুরু হয় তারাদের জন্ম। সেই অপার্থিব মহাজাগতিক সৌন্দর্যময় মুহূর্তকে কি ফিরে দেখা সম্ভব নয়?
নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সৌজন্যে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ (James Webb Telescope)। এই বছরের শেষ দিকের মধ্যেই এই নয়া টেলিস্কোপ তার কাজ শুরু করে দেবে। বিজ্ঞানীদের আশা, ২০২২ সালেই জেমস ওয়েবের সৌজন্যে সেই দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে পারবেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ৩ হাজার বছরের মমির সিটি স্ক্যান! উঠে এল কোন রহস্য?]
‘রয়্যাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল সোসাইটি’র মাসিক বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। তাতে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল জানিয়েছে, কীভাবে ব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে দূরবর্তী ৬টি ছায়াপথের সন্ধান পেয়েছে তারা। হাবল ও স্পাইটজার টেলিস্কোপের তোলা বিভিন্ন ছবিকে একত্রিত করে সেই সাফল্য মিলেছে। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের আলো শোষণ করার ক্ষমতা হাবলেসর থেকে সাত গুণ বেশি। তাই তার সাহায্যেই এবার তারার জন্মমুহূর্তের সাক্ষী হতে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।
এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, ৩১ অক্টোবর উৎক্ষেপণ করা হবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপকে। দিন ফুরোবে এতকালের বহু সাফল্যের কারিগর হাবল স্পেস টেলিস্কোপের। আর তারপর শুরু হবে অপেক্ষা। এতকাল ধরে যে দৃশ্যের জন্ম দেখতে মুখিয়ে ছিলেন বিজ্ঞানীরা, এবার সেই দৃশ্যই তুলে ধরবে জেমস ওয়েব। কেবল বিজ্ঞানীরাই নয়, প্রতীক্ষায় সারা বিশ্বের মহাকাশপ্রেমী মানুষেরাও।