সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর জন্মের নেপথ্যে নাকি বিশাল অবদান 'গুরুগ্রহ' বৃহস্পতির! সৌরজগতে প্রথম জন্ম নেওয়া বৃহস্পতিই নির্ধারণ করে দিয়েছিল পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহের ভবিষ্যৎ। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি বিজ্ঞানীদের। চলতি সপ্তাহে তাঁদের এই সংক্রান্ত গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানের নামী জার্নাল 'সায়েন্স অ্যাডভান্স'-এ। তা থেকেই জানা গেল বৃহস্পতির অবদানের কথা। বলা হচ্ছে, সূর্য থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে পৃথিবীকে কার্যত বাঁচিয়ে দিয়েছে সৌরজগতের সর্ববৃহৎ গ্রহটি। নইলে সূর্যের টানে আগুনের গোলায় ঝাঁপ দিত নীল গ্রহ! এবং অচিরেই ছাই হয়ে যেত।
আমেরিকার হিউস্টনের রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের সমীক্ষায় একাধিক চমকপ্রদ তথ্য মিলেছে। জানা যাচ্ছে, সৌরজগতের মধ্যে প্রথম জন্ম হয় বৃহস্পতির। তা দ্রুত হারে বাড়তে থাকে। আর মহাকর্ষ বলের আকর্ষণ-বিকর্ষণের টানাপোড়েনে নির্দিষ্ট কক্ষ তৈরি করে। এরপর পৃথিবীর জন্মের সময় বৃহস্পতিই তাকে আগলে রেখেছিল ওই নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে! গুরুগ্রহের জন্য সূর্যের প্রবল আকর্ষণে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়েনি পৃথিবী। নইলে জন্মলগ্নেই সূর্য তাকে গিলে খেয়ে ফেলত! শুধু আগলে রাখাই নয়। ধীরে ধীরে সূর্যকে পাক খেতে খেতে এমন একটা দূরত্বে পৌঁছয়, যেখানে প্রাণধারণের উপযুক্ত আবহাওয়া গড়ে উঠেছে। কাজেই নীল গ্রহকে মানুষের বসবাসযোগ্য করে তোলার নেপথ্যে বৃহস্পতি খুব বড় ভূমিকা পালন করেছে, নিঃসন্দেহে।
এরপর ধীরে ধীরে শুক্র, মঙ্গল গ্রহের জন্ম হয়েছে। তারা নিজ নিজ কক্ষপথে থিতু হয়েছে। এর নেপথ্যেও রয়েছে গুরুগ্রহের অবদান। রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও সৌর বিভাগের বিজ্ঞানী এবং সাম্প্রতিকতম গবেষক দলের অন্যতম আন্দ্রে ইজিদ্রো জানিয়েছেন, বৃহস্পতি সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহের তকমা নিয়েই থেমে থাকেনি। সত্যিকারের অগ্রজের মতো বাকি গ্রহদের আগলে রেখেছে। শুধু তাও নয়, সৌরজগতে কোন গ্রহের অবস্থান ঠিক কোনখানে হবে, সেটাও নির্ধারিত করেছে গুরুগ্রহ। নিজের অবস্থান এবং আয়তনের নিরিখে সূর্য থেকে বাকি গ্রহগুলির দূরত্ব স্থির হয়েছে। ইজিদ্রোর মতে, যদি বৃহস্পতি না থাকত, তাহলে আজকের পৃথিবীকে হয়ত পেতাম না আমরা।
