shono
Advertisement
Owl

শহর থেকে জেলায় নিরুদ্দেশ লক্ষ্মীর বাহন, কেন কমছে প্যাঁচার সংখ্যা?

কথিত আছে, রাতের অন্ধকারে সাদা পেঁচা বা লক্ষ্মীপেঁচার দর্শন পেলে বদলে যায় ভাগ্য।
Published By: Akash MisraPosted: 11:29 AM Oct 16, 2024Updated: 11:33 AM Oct 16, 2024

নব্যেন্দু হাজরা: কথিত আছে, রাতের অন্ধকারে সাদা পেঁচা বা লক্ষ্মীপেঁচার দর্শন পেলে বদলে যায় ভাগ‌্য। আর তা যদি লক্ষ্মীপুজোর রাতে হয়! তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি যা, তাতে আপনি রাত জেগে মা লক্ষ্মীর দেখা পেলেও তার বাহনের দেখা পাওয়া ভার। কারণ, শহর-শহরতলি থেকে কার্যত উধাও পেঁচা। বলা ভালো লক্ষ্মীপেঁচা। বড় বড় আবাসনের ভিড়ে, তারাই এখন গৃহহীন। সঙ্গে রয়েছে খাবারের অভাব। চারিদিকে আলোর চাকচিক‌্য। সবমিলিয়ে লক্ষ্মীর বাহনরাই আজ অস্তিত্বসংকটে। ফলে সৌভাগ্যের আশায় বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে তাদের দেখার অপেক্ষা করলেও এক্ষেত্রে কপাল খোলা মুশকিল। পক্ষীতত্ত্ববিদদের কথায়, বছর দশেক আগেও সল্টলেক-সহ কলকাতার কাছাকাছি অন‌্যান‌্য অনেক জায়গাতে পেঁচার দেখা পাওয়া যেত। কিন্তু এখন সেখানেও পেঁচা নেই। শহর থেকে জেলায়–সংখ‌্যায় ক্রমশ তারা কমেই চলেছে। গভীর আঁধারেও যে কারণে আর জ্বলতে দেখা যায় না দুটি চোখকে।

Advertisement


পক্ষ্মীবিশেষজ্ঞরা জানান, শহর-শহরতলি থেকে পেঁচার সংখ‌্যা কমে যাওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে। তারমধ্যে সবথেকে বড় যেটা সেটা হল পেঁচার বাসস্থানের অভাব। মূলত পুরনো বাড়ির কুঠুরিতে থাকে মা লক্ষ্মীর বাহনরা। রাতে সব আলো নিভে গেলে তারা বেরোয়। কিন্তু এখন পুরনো বাড়িই তো আর দেখা যায় না। কলকাতা শহরে তো দূরবিন দিয়ে খুঁজতে হয়। জেলাতেও প্রায় একই অবস্থা। স্বাভাবিকভাবেই পেঁচারা তাই গৃহহীন। এর পাশাপাশি রয়েছে, তাদের খাবারের জোগানের অভাব। মা লক্ষ্মীর বাহন, গণেশের বাহনকে ধরে খায়। মানে পেঁচা খায় ইঁদুর। চাষের জমিতে যথেচ্ছভাবে কীটনাশক দেওয়ার ফলে প্রচুর ইঁদুর মারা যায়। ইঁদুরের বংশবিস্তারও কমে গিয়েছে। শহরেও তাই। বাড়িতে ইঁদুর ঢুকলে মানুষ মেরেই ফেলে কীটনাশক খাইয়ে। ইঁদুরের সংখ‌্যা কমতে থাকায় পেঁচাদেরও খাবারের অভাব হচ্ছে। এটাও পেঁচা কমে যাওয়ার অন‌্যতম বড় কারণ। তাছাড়া হিন্দিবলয়ে দিওয়ালির সময়ে লক্ষ্মীপেঁচাকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে বাড়িতে আনার একটা রেওয়াজ রয়েছে। আর সেই হিসাবে বহু পেঁচা চোরাকারবারিদের হাতে পাচার হয় বাইরে। পাচার হতে গিয়ে মারাও যায় অনেক। এই পেঁচাকে ধরে বহু তান্ত্রিক তন্ত্রসাধনা করে। এইসব কাজেও পেঁচা পাচার হয়। কমতে থাকা মা লক্ষ্মীর বাহনকে ঘিরে এসব অসাধু কারবার চলায় সেই সংখ‌্যা আরও কমছে। আর সবশেষে গত কয়েকবছরে শহর থেকে শহরতলি জেলায় আলো ঝলমলে রাস্তাঘাট। রাতেও আলো জ্বলে থাকে সর্বত্র। ফলে বন-জঙ্গলের কোনও কুঠুরিতে তারা থাকলেও বাইরে বেরোতে পারে না। যে কারণে তাদের ডাকও আগের মতো শোনা যায় না। দেখা পাওয়া তো দূর অস্ত। আর এই কারণেই লক্ষ্মীপুজোর রাতেও লক্ষ্মীর বাহনের দেখা পাওয়া হয়ে ওঠে না আম-গেরস্তের। বার্ড ওয়াচার সোসাইটি-র সম্পাদক সুজন চট্টোপাধ‌্যায় বলেন, ‘‘পুরনো বাড়ি এখন আর সেভাবে দেখাই যায় না। পেঁচারা ওইসব বাড়ির কুঠুরিতেই থাকে। চতুর্দিকে ফ্ল‌্যাট এখন। যে কারণে মা লক্ষ্মীর বাহনরা ক্রমশ বাসস্থানহীন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া খাবারের অভাবও পেঁচা কমে যাওয়ার একটা বড় কারণ।’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • তাছাড়া খাবারের অভাবও পেঁচা কমে যাওয়ার একটা বড় কারণ।’’
  • শহর-শহরতলি থেকে পেঁচার সংখ‌্যা কমে যাওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে।
Advertisement