সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফুরলো শীতঘুমের কাল। কাটল দীর্ঘ রাত। চারমাস পর সূর্যের মুখ দেখে ঘুম ভাঙল দক্ষিণ মেরুবাসীর। সোমবার বরফাবৃত আন্টার্কটিকার (Antarctica) কালো রাত ঘুচিয়ে দিল সূর্যের সোনালি ছটা (Sun rise)। আর এতগুলো দিন আঁধারে ডুবে থাকার পর দিনের প্রথম আলো মেখে নতুন একটা সময়ে পা রাখলেন আন্টার্কটিকাবাসী। বিজ্ঞানীরাও স্বাগত জানালেন নতুন দিনকে। এবার তাঁদের পরীক্ষানিরীক্ষার পরিসরও বদলে যাবে। প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে পৃথিবীর শেষপ্রান্তে থাকা পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি। সবমিলিয়ে, আন্টার্কটিকায় নতুন সময়ের সূচনায় যেন ফিরল প্রাণের ছোঁয়া।
ভূগোল অনুযায়ী, পৃথিবীর দুই মেরুপ্রদেশ (Polar region) বছরে ৬ মাস আলো এবং ৬ মাস অন্ধকারে ঢাকা থাকে। তাতেই অভ্যস্ত সেখানকার বাসিন্দারা। তবু প্রতিবার আলো-আঁধারির এই চক্রবৎ পরিবর্তন যেন তাঁদের কাছে নতুন। শীত কেটে বসন্তের ছোঁয়া লাগতেই নতুন উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন তাঁরা। আসলে, গবেষণার জন্য শীতার্ত আন্টার্কটিকার বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট ক্যাম্প করেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে একটিই সারাবছর ধরে চলে। তার বেশিরভাগটাই ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (European Space Agency)। চার, পাঁচ মাসের দীর্ঘ রাতে তাঁদের কাজ একরকম হয়। আবার দিবাভাগে সেই কাজের ধরন পালটায়। ESA-র বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, নভেম্বর থেকে আন্টার্কটিকায় শুরু হচ্ছে গ্রীষ্ম। নতুন উদ্যমে বিজ্ঞানীরা ফিরবেন মেরুর গবেষণাগারে।
[আরও পড়ুন: মহাকাশে ফের সচল নাসার হাবল টেলিস্কোপ, পাঠাল ‘গয়নার মতো’ ঝলমলে ছায়াপথের ছবি]
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির বিজ্ঞানী নিক স্মিথ বলছেন, “দীর্ঘ চারমাস ধরে অন্ধকারে কাটানোটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। এই সময়ে সাইকোলজিক্যাল (Psychology) নানা বিষয় নিয়ে গবেষণায় আমরা ব্যস্ত থাকি। আরও চমকপ্রদ বিষয় এটাই যে, এই অন্ধকারের সময় কিন্তু মানবশরীর সম্পূর্ণ অন্যভাবে কাজ করে। তাঁদের ঘুম, খিদে, ক্লান্তি, মুড – এসব বদলে যায়। সেটাও আমাদের গবেষণার একটা অংশ।” আবার রোদ উঠলে অন্যরকম। বছরভর মানুষের এই শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার নানা ধরন নিঃসন্দেহে গবেষণার বিষয়। রোদ উঠেছে বলে সেসব বৈজ্ঞানিক ক্যাম্পে এখন প্রাণের স্পন্দন। দীর্ঘ শীত আর অন্ধকারে যন্ত্রপাতিগুলো যেন জড়োসড়ো হয়ে পড়েছিল। এবার তাদের ফের জাগিয়ে তোলার পালা। ঝাড়পোঁছ করা হচ্ছে, পরিষ্কারের কাজ চলছে শিবিরগুলিতে।