সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিন বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণে এ জগতের জন্ম দিয়েছিল। এবার সময়ের চাকা ঘুরে গিয়েছে। বাড়তে বাড়তে ফেটে গিয়ে পৃথিবী ধ্বংস হবে, এমনটা নয়। শেষের সেদিন নিয়ে উলটো সুর বিজ্ঞানীদের। দক্ষিণ কোরিয়ার একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে জানিয়েছেন, মহাসংকোচনের পালা শুরু হয়ে গিয়েছে, যার বৈজ্ঞানিক নাম বিগ ক্রাঞ্চ (Big Crunch)। মহাকর্ষ বল ক্রমশ গহ্বরে টেনে নেব সব! কুঁচকে তালগোল পাকিয়ে তার পেটে সেঁধিয়ে যাবে গোটা বিশ্ব। এমনকী নক্ষত্রদেরও গিলে খাবে মহাশূন্য। কিন্তু কতদিনে সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে? তার কোনও সময় বলতে পারেননি কেউ। আপাতত তাঁদের এই মহাসংকোচন তত্ত্ব পদার্থবিজ্ঞানের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। তা নিয়েই এই মুহূর্তে তুঙ্গে চর্চা।
ঠিক কী বলছে দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণা? বলা হচ্ছে, এই ব্রহ্মাণ্ডকে ঘিরে থাকা ডার্ক এনার্জি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। যার জেরে ধীরে ধীরে এর দখল চলে যাবে মহাকর্ষ বলের আওতায়। অর্থাৎ বিশ্বজুড়ে মহাকর্ষ বলেই হয়ে উঠবে নিয়ন্ত্রক। আর তার জেরে প্রবল আকর্ষণে সব গোগ্রাসে গিলতে থাকবে সে। প্রাথমিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের তত্ত্ব অনুযায়ী জানা গিয়েছিল, পৃথিবী বিস্ফারিত হওয়ার গতি কিছুটা কমছে। তা সত্ত্বেও বৃদ্ধি হতে হতেই একদিন ফেটে যাবে এ বিশ্ব। ১৯৯৮ সাল থেকে নাকি সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি মহাশূন্য থেকে পাওয়া কিছু সুপারনোভার তথ্য বিশ্লেষণ করে অন্য কথা বলছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
সিওলের ইওনসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়ং উক লি প্রথম এসব তথ্য প্রকাশ করেন। তাঁর অধীনস্ত গবেষকদলের ব্যাখ্যা, ডার্ক এনার্জি দুর্বল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাচ্ছে মহাকর্ষ বল। সেই প্রচণ্ড টানে তারা থেকে শুরু করে সমস্ত মহাজাগতিক বস্তু ঢুকে যাবে তার হাঁ মুখে। লন্ডনের এক অধ্যাপক অফার লাহাভ বলছেন, যদি ডার্ক এনার্জির জায়গা দখল করে মহাকর্ষ, তাহলে গোটা পদার্থবিজ্ঞানের ভিত নড়ে যাবে। গবেষণা অনুযায়ী, স্থান-কাল-পাত্র বলে আলাদা কিছু থাকবে না। সব দুমড়েমুচড়ে একটা আগুনের গোলা তৈরি হবে। তারায়-তারায় সংঘর্ষ, ছায়াপথ একে অপরের কাছাকাছি এসে মিলেমিশে যাওয়া, বিকিরণের জেরে কয়েকগুণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি - সবমিলিয়ে চূড়ান্ত একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে মহাশূন্যে। এভাবেই প্রলয় ঘটে নেমে আসবে পৃথিবীর ধ্বংস মুহূর্ত।
