সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভূখণ্ড ছাড়িয়ে এবার মহাশূন্যেও যুদ্ধের দামামা। ইউক্রেন-রাশিয়ার (Russia Ukraine Conflict) যুদ্ধের মাঝে নিজেদের দাপট এখন মহাকাশেও দেখাতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন (Vladimir Putin)। এমনই আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছে আমেরিকার ‘ন্যাশনাল রিকনাইস্যান্স অফিস’। এই সংস্থার উপর উপগ্রহ মারফত গোয়েন্দা নজরদারির দায়িত্ব। তারাই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার-বিবেচনা করে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে আমেরিকা-সহ অন্যান্য শত্রু দেশগুলির উপগ্রহ নষ্ট করতে পারে রাশিয়া। তাতে যে পরিমাণ মহাকাশ বর্জ্য তৈরি হবে, তার ধাক্কায় টলমল হয়ে যেতে পারে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS)। তাতে সামগ্রিকভাবে স্যাটেলাইট সিস্টেমে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
মহাকাশে বরাবরই কড়া টক্কর আমেরিকা-চিন-রাশিয়ার। বিভিন্ন অভিযানে একে অপরের কড়া প্রতিযোগী। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন যদিও আমেরিকার (USA) সঙ্গে যৌথভাবেই ব্যবহার করেন রুশ মহাকাশচারীরা। তবে সাম্প্রতিক যুদ্ধের আবহে সেই সহযোগিতায় আপাতত ইতি। বরং পুতিনের দেশ এখন মহাকাশেও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। NRO’র মতে, পুতিনের নিশানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার পাঠানো উপগ্রহগুলি। শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে সেসব ধ্বংস করতে পারে রাশিয়া। গোপন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের স্যাটেলাইট সিস্টেমে (Satellite System) আঘাত হানার প্রস্তুতি নিয়েছে পুতিনের দেশ।
[আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতা দখল করুন’, ইউক্রেনীয় সেনাকে ‘সামরিক অভ্যুত্থানে’র উসকানি পুতিনের]
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিততে মরিয়া রুশ প্রেসিডেন্ট। তার জন্য অনুকূল পরিস্থিতি অবশ্যই উপগ্রহ মারফত নজরদারির ব্যবস্থাকে অচল করে দেওয়া। তাহলে কোনওভাবেই ইউক্রেনের পক্ষে রুশ সেনার গতিবিধি টের পাওয়া সম্ভব হবে না। ফলে মোকাবিলার প্রস্তুতিও ধাক্কা খাবে। তাই তাদের প্রথম টার্গেট, জিপিএস সিস্টেমে আঘাত হানা। এনআরও-র অধিকর্তা স্কোলেসের বক্তব্য, ‘‘নাসা-সহ আমেরিকার সব ক’টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে তাদের পাঠানো উপগ্রহগুলির নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আমাদের উপগ্রহগুলির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রের কাজ কিছুদিনের বন্ধ রাখা হোক। রুশ হানাদারি থেকে সেগুলি বাঁচাতে এই পদক্ষেপ।”
[আরও পড়ুন: ‘আর আগে এত ক্ষতি হয়নি রাশিয়ার’, হাজার রুশ সেনাকে খতম করে হুঙ্কার ইউক্রেনের]
মহাশূন্যে নজরদারির জন্য পাঠানো বিভিন্ন উপগ্রহ ধ্বংসের জেরে শুধু যে ইউক্রেন সেনা এবং তাদের মিত্রদেশগুলিকে বিপদে ফেলা হবে, তা নয়। মহকাশে তৈরি বর্জ্যের ধাক্কায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। এছাড়া সামগ্রিকভাবে মহাকাশ গবেষণাও ধাক্কা খেতে পারে। এমনই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাছাড়াও থাকছে সাইবার হানার (Cyber Attack) ভয়ও। এ বিষয়ে রাশিয়ার কুখ্যাতি ভুবনজোড়া। তাই তা থেকেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে বাকি দেশগুলিকে।