shono
Advertisement

Breaking News

অসাধ্যসাধন! শূকরের ঘোঁত ঘোঁত ‘ডিকোড’ করলেন বিজ্ঞানীরা

রূপকথাকে সত্যি করল ডেনমার্ক।
Posted: 09:53 AM Mar 21, 2022Updated: 09:53 AM Mar 21, 2022

গৌতম ব্রহ্ম: ‘বেব’ সিনেমার কথা মনে আছে? কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকা শূকরছানাটি? ‘জাঙ্গল বুক’-এর জন্তুরা? বাগিরা, শের খান, ভালু, লক্ষা? সবাইকেই মানুষের ভাষায় কথা বলানো হয়েছে। এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ডানা লাগিয়ে সেই রূপকথাকেও সত্যি করল বিজ্ঞান! জন্তু-জানোয়ারের ভাষা ডিকোড করার প্রক্রিয়া শুরু হল। সূচনাতে সেই বরাহনন্দন। বিশেষ এক ধরনের অ্যালগোরিদম সফটওয়্যার কাজে লাগিয়ে চারশো শূকরের ভাষা নির্ভুলভাবে ‘ডিকোড’ করা হল।

Advertisement

এই অসাধ্যসাধন করে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ডেনমার্কের বিজ্ঞানীরা। ‘কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা’ বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নির্ভর পিগ ট্রান্সলেটর নামক যে অ্যালগোরিদম সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে, তা চারশো শূকরের চোদ্দোশোর বেশি অভিব্যক্তিসূচক শব্দ ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভুলভাবে বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছে। যার মধ্যে একদিকে রয়েছে তৃপ্ত ও খুশি হওয়ার মতো ইতিবাচক অভিব্যক্তি। অন্যদিকে কষ্ট ও খিদে পাওয়ার মতো নেতিবাচক অভিব্যক্তি। জন্ম থেকে মৃত্যু, একটি শূকর যা যা অভিব্যক্তিসূচক শব্দ করে, তা যন্ত্রের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ সম্ভব।

[আরও পড়ুন: সরকারি স্কুলে নীল-সাদা পোশাকে থাকবে ‘বিশ্ব বাংলা’ লোগো, নির্দেশিকা সমগ্র শিক্ষা মিশনের]

এটাই স্পষ্ট করে বলেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ কোপেনহেগেন’-এর গবেষণা। যার নেতৃত্বে রয়েছেন ‘অ্যানিম্যাল কমিউনিকেশন’ নিয়ে কাজ করা অধ্যাপক ডা. এলোডি ব্রিফার। তাঁর দাবি, “এই এআই ট্রান্সলেটরকে অ্যাপে পরিণত করে পশুপালকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া গেলে বিপ্লব আসবে পশুকল্যাণে, পশুপালনে।” একই বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী-গবেষক অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদারেরও। তাঁর পর্যবেক্ষণ, এটি বাস্তবে কাজে লাগাতে পারলে প্রাণী চিকিৎসা ও প্রাণীপালনে বিপ্লব আনা সম্ভব। তাছাড়া শূকর ছাড়া অন্য প্রাণীতে এই অনুবাদক সফটওয়্যারের সফল প্রয়োগ করা গেলে মানুষ-প্রাণী আন্তঃসম্পর্কেও প্রভূত পরিবর্তন আসবে।

পশুপাখির হাসি-কান্না নিমেষে ‘ডিকোড’ হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছবে। কে বলতে পারে চিড়িয়াখানায় গিয়ে আমরা অদূর ভবিষ্যতে বাঘের গর্জনকে পড়ে ফেলব না! পরিযায়ী পাখির কলতানের মানে বের করে ফেলব না! বিড়ালের ম্যাও ম্যাও, কুকুরের ঘেউ ঘেউ তো আছেই। আসলে, পশুপালন বা পোষ্যের পালনে শুধু পশুদের শারীরিক অবস্থাই গুরুত্ব পায়। তাদের মনের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখার কোনও উপায় ছিল না। এই পদ্ধতিতে পশুপাখির শারীরিক অসুবিধার কথা জেনে নিতে পারলে প্রাণী চিকিৎসকদেরও রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করতে অনেক সুবিধা হবে।

ব্রিফারের টিম সব মিলিয়ে প্রায় ৭৪১৪টি শূকরের ঘোঁত ঘোঁত রেকর্ড করেছে। কষাইখানা ও পশুখামারে থাকা শূকরের শব্দের নমুনা যেমন রয়েছে, তেমনই গবেষণার জন্য প্রস্তুত এনক্লোজারে রাখা শূকরের ভয়েস-স্যাম্পলও রেকর্ড করা হয়েছে। সব নমুনা বিশ্লেষণ করেই বেরিয়ে এসেছে আর্তনাদ, কষ্ট, কান্না, আনন্দ-উচ্ছ্বাসের শব্দক্ষেপণের ফারাক। আর্তনাদের শব্দ অনেক তীক্ষ্ম ও দীর্ঘস্থায়ী। কিন্তু আনন্দের ডাক ছোট ছোট স্পেলে ভাঙা। অনেকটা আমাদের হাসি-কান্নার মতোই।

[আরও পড়ুন: কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ, ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে ক্লোজ করা হল ৫ পুলিশকর্মীকে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement