অর্ণব আইচ: এক বিজ্ঞানীর গাড়ির পিছনে ‘পুলিশ’ লেখা গাড়ির ধাক্কা। তারই জেরে ওই বিজ্ঞানীকে চোটপাট ও তাঁর প্রতি দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠল এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সোমনাথ মুখোপাধ্যায় নামে ওই বিজ্ঞানী সরাসরি পুলিশ কমিশনার ও অন্য পুলিশকর্তাদের মেল করে এই ব্যাপারে অভিযোগ জানান। এদিন বিকেলে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো ঘটনাটি শোনেন। এই ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞানীকে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এই গাড়িটি ওই পুলিশ অফিসারের নিজস্ব গাড়ি। তাঁর চালক গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তবে ওই পুলিশ অফিসার ইউনিফর্ম পরে ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। পুলিশের কাছে করা সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটে। বড়বাজারে কর্মস্থল থেকে তিনি বেলগাছিয়ায় বাড়ি ফিরছিলেন। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে শ্যামবাজারের মোড় ঘুরতেই শ্যামপুকুর থানা এলাকায় ঘটে এই ঘটনাটি। এদিন সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁর গাড়ির সামনে বেশ কয়েকটি গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। তাই তাঁর গাড়িটিও দাঁড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ পিছন থেকে একটি গাড়ি তাঁর গাড়িকে সজোরে ধাক্কা দেয়। তিনি ও তাঁর চালক পিছনে ঘুরে দেখেন, গাড়িতে ‘পুলিশ’ লেখা।
[আরও পড়ুন: টালা ব্রিজের নকশার অনুমোদন দিল রেল, দেড় বছরে নির্মাণ শেষের দাবি পূর্তমন্ত্রীর]
তিনি দরজা খুলে নেমে নেমে আসেন। একই সময় ‘পুলিশ’ লেখা গাড়ি থেকে নেমে আসেন এক পুলিশ অফিসার। বিজ্ঞানীর অভিযোগ, ওই অফিসার নেমে এসে প্রথমে তাঁর চালকের উপর চোটপাট করেন। তিনি অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান। অভিযোগ, ওই পুলিশ অফিসার বিজ্ঞানীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে শুরু করেন। বিজ্ঞানী যখন তাকে বলেন, তার গাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। যেহেতু ‘পুলিশ’ লেখা গাড়ি এসে পিছনে ধাক্কা দেয়, তাই দোষ ওই গাড়ি চালকেরই। তখন ওই পুলিশ অফিসার তাঁকে বলেন, তিনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। থানায় অভিযোগ করলেও তাঁর কিছু যায় আসে না। সোমনাথবাবু জানান, এর পর তাঁর আর কিছু করার ছিল না। তাই তিনি ‘পুলিশ’ লেখা গাড়ির নম্বর প্লেট ও ওই পুলিশ অফিসারের ছবি তোলেন।
এদিন সকাল সাড়ে দশটায় তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথমে বিষয়টি জানান। এর পর দুপুরে তিনি পুলিশ কমিশনার, ডিসি (ট্রাফিক) ও ডিসি (নর্থ)কে মেল করে অভিযোগ জানান। এমনকী, নবান্নেও মেল করেন তিনি। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ডিসি (নর্থ) তাঁকে ফোন করেন। তাঁর কাছ থেকে পুরো ঘটনাটি শোনেন তিনি। সোমনাথবাবু জানান, ওই পুলিশকর্তা তাঁকে বলেছেন, অফিসার যা করেছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য। পুলিশকর্তার অনুরোধে বিজ্ঞানী তাঁকে ছবি দুটি হোয়াটস অ্যাপ করে পাঠান। পুলিশকর্তা তাঁকে আশ্বাস দেন। এর পরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িতে ‘পুলিশ” লেখা থাকলেও সেটি সম্ভবত সরকারি বা সরকারের ভাড়া নেওয়া গাড়ি নয়। এমনই তদন্তে জেনেছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: লড়াই শেষ, ২ দিন চিকিৎসার পর হাসপাতালে মৃত্যু ফ্লাইওভারের দুর্ঘটনায় আহত প্রৌঢ়ের]
এই ঘটনায় কেউ আহত হননি। তবে দুর্ব্যবহারের বিষয়টির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে তদন্তের জন্য ওই পুলিশ অফিসারকে শনাক্ত করে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এর পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।