shono
Advertisement

জল নয়, এই গ্রহে বৃষ্টিতে ঝরে পড়ে লোহা! প্রকৃতি বুঝতে হিমশিম তাবড় বিজ্ঞানীরা

গঠন ও আকারের জন্য় একে 'দৈত্য গ্রহ' বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। The post জল নয়, এই গ্রহে বৃষ্টিতে ঝরে পড়ে লোহা! প্রকৃতি বুঝতে হিমশিম তাবড় বিজ্ঞানীরা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 04:12 PM Mar 14, 2020Updated: 04:12 PM Mar 14, 2020

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘এখানে বৃষ্টি পড়ে বারো মাস/ এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে…’। নাহ, এখানে যতই বৃষ্টি হোক, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত এবং বহুচর্চিত কবিতা দিয়ে তুলনা করা যাবে না। কারণ, এখানে বৃষ্টিতে ঝরে পড়ে লোহার টুকরো। শুনে কল্পবিজ্ঞান মনে হচ্ছে? তাহলে বলি, এটা মোটেই কল্পনার কথা নয়। আমাদের সৌরজগতের বাইরে অনন্ত মহাকাশের কোনও এক প্রান্তে এক গ্রহ চোখে পড়েছে বিজ্ঞানীদের। তাকে ভালভাবে চিনতে গিয়েই চমকে উঠলেন তাঁরা। দেখলেন, অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা সম্পন্ন গ্রহে লোহার বৃষ্টি হয়। চিলিতে ইউরোপিয়ান অবজারভেটরির পক্ষ থেকে অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ পেতে তার খুঁটিনাটি জানতে মরিয়া বিজ্ঞানী মহল।

Advertisement

গ্রহের নাম Wasp-76b। পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব অন্তত ৬৪০ আলোকবর্ষ। নিকটবর্তী নক্ষত্রের সবচেয়ে কাছে থাকায় অত্যন্ত তপ্ত এই গ্রহ। দিনের তাপমাত্রা ২৪০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের কাছাকাছি থাকে। আর রাতে এক হাজার ডিগ্রি। যা কিনা লোহা গলন এবং জমাট বাঁধার জন্য আদর্শ। জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডক্টর ডেভিড এরেনরিখের কথায়, “ভাবুন তো, জলকণার বদলে এখানে বৃষ্টিতে টুকরো টুকরো লৌহকণা ঝরে পড়ে!” তাঁর নেতৃত্বেই Wasp-76b গ্রহ নিয়ে গবেষণা চলছে। অত্যাধুনিক এসপ্রেসো স্পেকট্রোমিটারে ধরা পড়েছে, এই গ্রহের নিরক্ষীয় অঞ্চলের উচ্চ তাপমাত্রার জন্য এখানে লোহাও বাষ্পীভূত হয়ে যায়। রাতের বেলার তাপমাত্রা আবার এতটাই নেমে যায় যে লোহা আবার জমে যায়। ঠিক যেভাবে জলকণা বাষ্পীভূত হয়ে মেঘ হয়ে বৃষ্টি আকারে নেমে আসে, সেরকমই হয় এখানে। তবে এখানে তফাৎ শুধু বৃষ্টির উপাদানে।

[আরও পড়ুন: লালগ্রহে মিলল প্রাণের সন্ধান! নয়া ছবি পাঠাল নাসার কিউরিওসিটি রোভার]

এ নিয়ে গবেষক ডক্টর ডেভিড এরেনরিখের ব্যাখ্যা, “আমরা দেখেছি, রাতে প্রায় ১০০০-১৪০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় লোহা মেঘের আকারে জমতে থাকে। তারপর বৃষ্টি আকারে ঝরে পড়ে। সেইসঙ্গে প্রবল হাওয়া থাকে, ঘণ্টায় ১৮ হাজার কিলোমিটার বেগে। এবার বায়ুমণ্ডলের ঠিক কোন স্তরে মেঘ ঘনীভূত হয়, তা আমাদের টেলিস্কোপে ধরা পড়েনি।”

বছর চার আগে Wasp-76b গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। এর গঠন এবং আকার দেখে ‘দৈত্য গ্রহ’ বলে উপাধি দেওয়া হয়েছিল। গ্রহটি বৃহস্পতির চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ চওড়া। তখনও বিজ্ঞানীরা এর রাসায়নিক গঠন বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। নতুন করে তা নিয়ে ফের পড়াশোনা শুরু করেছেন ডক্টর ডেভিড এরেনরিখ ও তাঁর সঙ্গীরা। তিনি বলছেন, “আমরা শক্তিশালী টেলিস্কোপ বা থ্রি ডি ছবিতে এমন কিছু দেখতে পাই, যা সাধারণ মানুষকে দেখাতে পারি না। তাই তাঁরা অনেক সময় ভুল বোঝেন। তাই যতটা সহজভাবে সম্ভব আমরা প্রতিবেদনে নতুন আবিষ্কার সম্পর্কে তথ্য রাখি। এই গ্রহটি সম্পর্কেও আমরা লেখালেখি করতে গিয়ে বুঝেছি, লৌহবৃষ্টিই এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়।” লোহাসমৃদ্ধ Wasp-76b গ্রহ সম্পর্কে জানার পর অনেকেই বলছেন, ভাগ্যিস ওর কাছাকাছি পৌঁছনো যাবে না। নইলে হয়ত লোহা সংগ্রহের হিড়িক পড়ে যেত ব্যবসায়ী মহলে!

[আরও পড়ুন: হংকংয়ের সৈকতে ছড়িয়ে ব্যবহৃত মাস্ক, সাফাই অভিযানে নামলেন পরিবেশপ্রেমীরা]

The post জল নয়, এই গ্রহে বৃষ্টিতে ঝরে পড়ে লোহা! প্রকৃতি বুঝতে হিমশিম তাবড় বিজ্ঞানীরা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement