সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিগ্রহকে (Saturn) নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের উৎসাহের শেষ নেই। কেবল জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাই নন, যে কোনও মহাকাশপ্রেমীরই দুর্বলতা রয়েছে এই গ্রহটিকে নিয়ে। এবং তার অন্যতম কারণ এর রাজকীয় বলয়। যার ভিতরে পাক খাচ্ছে শনির ৮২টি উপগ্রহ। আর এই ৮২টি উপগ্রহের মধ্য বিশেষ এক উপগ্রহের নাম টাইটান (Titan)। সৌরজগতের বৃহত্তম এই উপগ্রহে মিলেছে নদী, লেক ও সমুদ্রের চিহ্ন। রয়েছে ঋতুচক্রও। তবে কি টাইটানই সৌরজগতের ‘দ্বিতীয় পৃথিবী’? বাহ্যিক মিল থেকে সেকথা বলা গেলেও আসলে পৃথিবীর সঙ্গে তাদের পার্থক্যও নেহাত কম নয়।
‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ নামের এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। সেই গবেষণাপত্রেই উঠে এসেছে টাইটান সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক ম্যাথিউ ল্যাপোত্রের নেতৃত্বে এক গবেষক দল টাইটানের বুকে নদী, জলাশয় ও সমুদ্র খুঁজে পেয়েছে। বৃষ্টির ফলেই সেগুলি ভরে উঠলেও, এই নদী-সমুদ্র মোটেই জলে ভরতি নয়। তাহলে? গবেষকরা জানাচ্ছেন, তরল মিথেনে ভরেই তৈরি হয়েছে টাইটানের বরফ আচ্ছাদিত জমি। এবং নাইট্রোজেনের বাতাসেই তৈরি হয়েছে হাইড্রোকার্বনে তৈরি বালির টিলা।
পৃথিবীতে টিলার গঠনে সিলিকেট শিলা ও খনিজের ভূমিকা থাকে। পরে সময়ের সঙ্গেই সেগুলি ক্ষয়ে যেতে থাকে। একসময় চাপ, তাপে সেই পলি পাথরে পরিণত হয়। টাইটানেও একই প্রক্রিয়া দেখা যায় বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের। ফলে দূর থেকে দেখলে পৃথিবীর বহিরঙ্গের সঙ্গে মিল দেখতে পাওয়া যায় টাইটানের। কিন্তু আসলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে কোনও মিলই নেই টাইটানের।
কিন্তু প্রাণের সম্ভাবনা কি নেই শনির উপগ্রহে? গবেষকরা জানাচ্ছেন, তাঁদের মডেল থেকে কীভাবে টাইটানের পরিবেশকে বোঝা সম্ভব, তার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাঁরা। সেই সঙ্গেই তাঁদের দাবি, অচিরেই বোঝা যাবে টাইটানে জীবনের সম্ভাবনা কতটা।