স্টাফ রিপোর্টার: দেশ বিভাজনের পর শিয়ালদহ স্টেশনই ছিল ছিন্নমূল মানুষগুলোর ভারতে আসার প্রধান দ্বার। বিপত্তির মাঝেও নতুন করে বাঁচার পথ খুঁজে পাওয়ার শুরু এই স্টেশন থেকেই। দেড়শো বছরের বেশি পুরনো এই রেলপথটি ১৯৫২ সালের ১৪ এপ্রিল ইস্টার্ন রেলওয়ে জোনের মধ্যে চলে আসায় নতুন করে তার দিগন্ত প্রশস্ত করার ভূমিকা নেয় রেল।
১৮৮৪ সালে ১ জুলাই ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে গঠিত হয়েছিল। শিয়ালদহ ছিল তারই আওতায়। ১৯৪২ সালে ১ জানুয়ারি অসম-বেঙ্গল রেলওয়ে ও ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে সংযুক্ত হয়ে গড়ে ওঠে বেঙ্গল-অসম রেলওয়ে। এর পর দেশ স্বাধীনের সময় শিয়ালদহ স্টেশন পূর্বভারতীয় রেলের আওতায় আসে। যে রেল পরে ১৯৫২ সালে ইস্টার্ন রেল হিসাবে পরিচিতি পায়। ক্রমে শিয়ালদহ ইতিহাসের নানা অধ্যায়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায়।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ওই স্টেশন থেকে যাত্রা করে শান্তিনিকেতন যান। শিকাগো বিশ্ব ধর্ম মহাসম্মেলনে ভাষণ দিয়ে নদীবক্ষে এসে পরে ট্রেনে শিয়ালদহ হয়েই কলকাতায় ফেরেন স্বামী বিবেকানন্দ। এই স্টেশনের শাখায় যুক্ত বারাকপুর। যা স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর যোদ্ধা মঙ্গল পাণ্ডের নামের সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণভাবে যুক্ত।
এই শিয়ালদহের উত্তরে রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, নৈহাটি, বনগাঁ, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জায়গার সঙ্গে যুক্ত। যা নানা দিক থেকে বৈচিত্রপূর্ণ। নানা ইতিহাস, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, শিল্প ও বৈদেশিক সম্পর্ককে দৃঢ় করেছে।
সমতুলভাবে দক্ষিণেও যুক্ত হয়েছে ডায়মন্ড হারবার, লক্ষ্মীকান্তপুর, নামখানা, বজবজ-সহ একাধিক জায়গার সঙ্গে। সুন্দরবন, গঙ্গাসাগরের মতো ভ্রমণ ক্ষেত্রের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলেছে। বন্দরক্ষেত্রের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে যার বিস্তৃতি।
শিয়ালদহ ডিভিশন প্রতিদিন বারোশোর বেশি ট্রেন চালিয়ে শহরতলি ও শহরকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। ২০০১ সালে চিৎপুর স্টেশন বা কলকাতা স্টেশন থেকে নতুন পরিষেবা শুরু হয়। এখন যেখান থেকে অসংখ্য দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল করছে। এই ডিভিশনে এখন সব লোকাল ট্রেন ১২ বগির হওয়ার পাশাপাশি অমৃত ভারত প্রকল্পে উন্নয়নের শিখরে উঠছে।