সুব্রত বিশ্বাস: করোনা আবহে আর্থিক সংকটে নাজেহাল রেল (Indian Railways)। ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক না হওয়ায় আয়ের পথ সীমিত। এহেন পরিস্থিতিতে ফের একবার রেলের অন্দরে আর্থিক দুর্নীতির খবর ফাঁস। কোভিড পরিস্থিতির সুযোগে ‘নেপোয় মারছে দই’। এবার বুকিং কাউন্টার থেকে টাকা সংগ্রহ করে তা জমা না দিয়েও রেক্টিফায়েড ব্যালেন্স শিটে জমা দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে শিয়ালদহের একাংশ বুকিং সুপারভাইজারদের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে ‘প্রমাণ সহ’ রেলের কমার্শিয়াল বিভাগের কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে অ্যাকাউন্টস বিভাগ। বিষয়টি সিনিয়র ডিসিএমের গোচরে আনা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘রাজা-মন্ত্রী হওয়া যাবে না বুঝে মুকুট পরছেন’, ফের অনুব্রতকে নিশানা দিলীপের]
রেলের বুকিং কাউন্টারের আয় ব্যয় খতিয়ে দেখে ট্রাভেলিং ইন্সপেক্টর অফ একাউন্টস (টিআইএ)। স্টেশনের আয়ের টাকা প্রয়োজনে তোলার আইন রয়েছে ক্ষেত্র বিশেষে। যে টাকা রিসিট পেয়ে বুকিং সুপারভাইজার দিতে পারেন। পরে তা নিয়মগত ভাবে স্পেশ্যাল ক্রেডিট হিসাবে জমা পড়ার পর রেক্টিফায়েড ব্যালেন্স শিটে দেখিয়ে দেওয়া হয়। এজন্য স্পেশ্যাল ক্রেডিটে টিআইএ’র স্বাক্ষর লাগে। এমন স্পেশ্যাল ক্রেডিটে স্বাক্ষর ছাড়াই টাকা ক্লিয়ারেন্স দেখানো হয়েছে বালিগঞ্জ বুকিং অফিসে। অভিযোগ, রেক্টিফায়েড ব্যালেন্স শিটে টাকা ক্লিয়ারেন্স দেখানো হলেও তা আদৌ জমা পড়েনি। এমনকি টিআইএ কেউ স্পেশাল ক্রেডিটে স্বাক্ষর করেনি। বিষয়টিকে জালিয়াতি আখ্যা দিয়ে ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে একাউন্টস বিভাগ। লিখিতভাবে অভিযোগে জানানো হয়েছে, গত ৭ ও ৮ মার্চ দু’দফায় পাঁচ-পাঁচ মোট দশ হাজার টাকা তোলা হয় বালিগঞ্জ বুকিং অফিস থেকে। যে টাকা তোলার বিষয়টি ব্যালেন্স শিটে উল্লেখ করেন বুকিং সুপারভাইজার। পরে এপ্রিল মাসে রেক্টিফায়েড ব্যালেন্স শিটে টাকা ক্লিয়ারেন্স দেখানো হয় স্পেশ্যাল ক্রেডিট হিসাবে। যে স্পেশ্যাল ক্রেডিট টিআইএ কেউ দেয়নি। বিষয়টি একেবারে জলের মতো পরিষ্কার।
এদিকে, দুর্নীতির অভিযোগে অ্যাকাউন্টস বিভাগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বললেও দীর্ঘ সময় কমার্শিয়াল বিভাগ অভিযুক্ত বুকিং সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অ্যাকাউন্ট বিভাগ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। স্পেশ্যাল ক্রেডিটের নামে এই দুর্নীতির ব্যাপ্তি ক্রমশ বাড়ছে বলে অভিযোগ তাদের। শিয়ালদহের ডিআরএম এসপি সিং জানান, সিনিয়র ডিসিএম সংশ্লিষ্ট বিষয়টি জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে। তবে স্পেশ্যাল ক্রেডিটে টিআইএ-দের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক নয়। তবে বিষয়টিকে খুব ভাল নজরে দেখছেন না রেলকর্তারা। তাদের মতে, কমার্শিয়াল কর্তাদের উদাসীনতায় রেলের আয় বহু ক্ষেত্রে নয়ছয় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দায়িত্ববান না হলে বিপত্তি বাড়বে বলে তাঁদের মত।