সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে মুছে ফেলা হোক ‘সমাজবাদ’ (Socialist) এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ (Secular) শব্দদুটি। শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর আর্জির শুনানি আগামী আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে দিল, ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতের সংবিধানের মূল কাঠামোর অঙ্গ।
সুব্র্যহ্মণ্যম স্বামীর আর্জি খারিজ করার আগে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, "ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি যে সংবিধানের মূল কাঠামোর অন্তর্গত তা একাধিক রায়ে আগেই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।" 'সমাজতান্ত্রিক' শব্দটি সম্পর্কে শীর্ষ আদালতের বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, "সমাজতান্ত্রিক শব্দের অভিধানগত অর্থ মেনে আমরা চলছি না। সম্ভবত আমরা শব্দটির নিজস্ব সংজ্ঞা তৈরি করেছি।"
[আরও পড়ুন: মমতার বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে পোস্ট করে মুছে দিল রাজভবন, তুঙ্গে বিতর্ক]
উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালে সংবিধানের ৪২ তম সংশোধনী হিসেবে ২(এ) ধারা অনুযায়ী প্রস্তাবনায় এই শব্দদুটি যোগ করা হয়েছিল। তার আগে থেকেই অবশ্য ভারত সব ধর্মের মানুষকে সমানাধিকার দেওয়ার চল ছিল। সংবিধানে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতা এই দেশের মূল ভিত্তিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু মামলাকারী সুব্র্যহ্মণ্যম স্বামীর দাবি, সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজবাদ’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দদুটি যোগ করাটা আসলে সংবিধানেরই একাধিক অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। সংবিধানপ্রণেতারা কখনওই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দগুলি যোগ করতে চাননি। তাছাড়া সংবিধানের প্রস্তাবনা সংশোধন করা সংসদের এক্তিয়ারের বাইরে।
[আরও পড়ুন: তিস্তায় তলিয়ে যাবে না তো ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক? লাগাতার ধস-ফাটলে বাড়ছে শঙ্কা]
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, সংবিধান প্রস্তাবনা সংসদ বদলাতে পারে কিনা, সেটাই মূল বিচার্য। বিষয়টি মূল মামলায় যোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইনজীবীদের। এই একই রকম দাবিতে আরও দুটি আর্জি জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। সেই আর্জিগুলিকেও একসঙ্গে জুড়ে আগস্টে মামলার শুনানি হতে পারে।