সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেকে ভগবানের অংশ বলে মনে করত। যে কোনও রোগ সারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নাকি ছিল তার। কিন্তু ঈশ্বরের নাম করে সেই ব্যক্তি আসলে সাধারণ মানুষকে ফাঁকি দিত। তাদের রোগ নিরাময় করে দেবে বলে টাকা নিত। অবশেষে তার বিরুদ্ধেই প্রতারণার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh)। সেই রাজ্যের পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদক আইনের(Drugs and Magic Remedies Act) আওতায় মামলা দায়ের করেছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মুকেশ নোনিয়া (Mukesh Nonia)। স্বঘোষিত এক ধর্মগুরু সে। এই ব্যক্তি নিজেকে ভগবানের অংশ হিসেবে মনে করত। সে দাবি করত, স্বয়ং মা কালী তার বেশেই ফিরে এসেছেন এই পৃথিবীতে।তার মধ্যে রয়েছে ঐশ্বরিক ক্ষমতা। সেই ক্ষমতার জোরেই যে কোনও রোগ সারিয়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে সে। এমনকি সারিয়ে ফেলতে পারে ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি। পুলিশ সূত্রের খবর, তার বাড়ি বিহারের(Bihar) একটি গ্রামে। বারাণসী থানার সাব ইমস্পেক্টর সুফিয়ান খানের (Sufiyan Khan) নেতৃত্বে বিহারের সেই গ্রামে খোঁজ চালিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি লুক আউট (look out) নোটিশও জারি করেছে পুলিশ। কিন্তু এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি মুকেশকে।
[আরও পড়ুন: ‘মৃত্যুদণ্ডের জন্যই বেড়েছে ধর্ষণের পর খুনের প্রবণতা’, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে তুঙ্গে বিতর্ক]
সাব ইনস্পেক্টর খান এর বক্তব্য অনুযায়ী, প্রায়শই বারাণসীর (Varanasi) দোমারি (Domari) গ্রামের একটি মন্দিরে আসর বসাতেন এই ব্যক্তি। সেখানে জড়ো হতেন প্রায় ৩-৪ হাজার মানুষ। এমনই একদিন আসরের শেষে মন্দিরের পুরোহিতের সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে বচসায় জড়ান মুকেশ। এই ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয় পুলিশকে এবং মামলা দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের একাধিক জায়গা থেকে মানুষ আসতেন এখানে। প্রত্যেকেই মুকেশ নামের ওই ‘বাবা’-কে দক্ষিণা হিসেবে দিয়ে যেতেন মোটা অঙ্কের টাকা। বিনিময়ে মুকেশ নাকি কালো জাদুর মাধ্যমে আগত দর্শনার্থীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করত। বেশিরভাগ মানুষই আসতেন নিজেদের রোগ নিরাময়ের আশা নিয়ে।
[আরও পড়ুন: সেনা আবাসে নাবালিকাকে একাধিকবার ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ITBP জওয়ান]
গ্রামের এক ব্যক্তির বক্তব্য অনুযায়ী, মুকেশ দীর্ঘদিন অন্ধপ্রদেশে শ্রমিক হিসাবে কাজ করত। বছর দুয়েক আগে হঠাৎই একদিন শাড়ি পরে নিজের গ্রামে হাজির হয় মুকেশ। ঠোঁটে লিপস্টিক, কপালে সিঁদুর পরে পুরোদস্তুর এক দেবীর মতো সেজে সবার সামনে আসে সে। তারপর সবার উদ্দেশে বলে, দীর্ঘ ১৮ বছরের তপস্যার পর দেবী শীতলা তাকে বর দিয়েছেন। আর সেই ক্ষমতার জোরেই তিনি সারিয়ে দিতে পারেন ক্যানসারের মতো রোগ। প্রথমে স্থানীয় একটি কালীমন্দিরেই তিনি বসাতেন আসর। মূলত গ্রামের মহিলারা আসতেন সেখানে। কিন্তু গত মাসেই মুকেশের অনুচরদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীদের বচসা হয়। ক্রমে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন অনেকে। বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছিল সেই ঘটনায়। তারপর থেকেই নিজের গ্রাম থেকে পালিয়ে বারাণসীর ওই মন্দিরে ঘাঁটি গাড়ে মুকেশ। গ্রামের অধিকাংশেরই দাবি, মুকেশ একজন ঠগ ব্যক্তি। এভাবেই সে মানুষ ঠকিয়ে টাকা নিত।