অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বাঙালির মিষ্টি প্রেম চিরন্তন। তা সে আনন্দ যে উৎসবই হোক না কেন। কিন্তু পয়লা বৈশাখে হালখাতায় বিভিন্ন দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উপহার হিসাবে পাওয়া মিষ্টির প্যাকেটের স্বাদই যেন আলাদা। কিন্তু হলে কি হবে! ব্যবসায়ীদের মিষ্টি বিতরণের এই চল ও রেওয়াজ আগের তুলনায় কিছুটা হলেও কমেছে বলেই দাবি বেশ কয়েকজন মিষ্টি ব্যবসায়ীর। কারণ হিসাবে উঠে এসেছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। কিন্তু তাই বলে বছরের প্রথম দিনে নিত্যনতুন মিষ্টির সম্ভার থাকবে না দোকানে তা কিন্তু নয়, বরং তা আরও বেশি করে থাকছে।
কালনার বারুইপাড়া, চকবাজার এলাকায় বেশ কয়েকটি নামীদামী মিষ্টির দোকান রয়েছে। নিত্যনতুন মিষ্টির রসনাতৃপ্তিতে তাঁদের জুড়ি মেলা ভার। বছরের বিভিন্ন সময়ে সেই দোকানগুলিতে মিষ্টিপ্রেমী ক্রেতাদের ভিড় এতটাই উপচে পড়ে যে সামাল দিতে নাকানিচোবানিও খেতে হয়। নতুন বছরের প্রথম দিনেই নিত্যনতুন মিষ্টি ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে ও তাই কয়েকদিন ধরেই জোর প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। তৈরি হচ্ছে ভিন্ন স্বাদের নিত্যনতুন মিষ্টিও। বারুইপাড়ার অভিজিৎ মোদক নামের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী জানান, “নতুন বছরের জন্য ময়দা, ঘি, কাজু, কিশমিশ দিয়ে তৈরি ক্ষীরকান্তি নামের নতুন মিষ্টি তৈরি করার পাশাপাশি কাঁচা আম ও সন্দেশ দিয়ে তৈরি ম্যাঙ্গো বরফিও হচ্ছে। এছাড়া ক্ষীরপুলি, দরবেশ, লাড্ডু, কালাকাঁদ-সহ বিভিন্ন রকমের মিষ্টি তো থাকছেই।”
[আরও পড়ুন: নীল ষষ্ঠীতে স্ত্রীর সঙ্গে গঙ্গায় স্নান করতে নেমে বিপত্তি, তলিয়ে গেলন ভাটপাড়ার যুবক]
গুনগত মানকে ঠিক রেখে বেশ কয়েকটি মিষ্টির দাম সামান্য হলেও ২-১ টাকা বাড়াতে হচ্ছে বলেও তিনি জানান। কারণ, হিসাবে তিনি গ্যাস সিলিন্ডার, ছানা, চিনি, তেলের দাম বৃদ্ধির কথাও তুলে ধরেন। এছাড়া রমজান মাসে দুধের জোগান কম থাকায় দুধের দামও বেড়েছে বলে দাবি তার। একসময় হালখাতায় বিভিন্ন দোকানদাররা যেভাবে মিষ্টির প্যাকেটের অর্ডার দিতেন তাও যেন তুলনামূলকভাবে বেশ কয়েকবছরের তুলনায় কম। এমনই দাবি কালনা ও মন্তেশ্বরের মিষ্টি ব্যবসায়ী রনজিৎ মোদক ও অমিত বলের। কারণ হিসাবে উঠে এসেছে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও পছন্দের পরিবর্তনে। একসময় হালখাতার উপহার হিসাবে প্যাকেটে হরেকরকমের মিষ্টি থাকলেও এখন অনেক দোকানদার কেক,স্ন্যাকসের মত বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী দিয়ে নতুন বছরের মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।