সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংসার থেকে সিনেপর্দা রাজনীতি সর্বত্রই বিরাজমান। এই বিশ্বের কোনও কিছুই রাজনীতির বাইরে নয়। তিন দশকের উপরের ফিল্মি কেরিয়ারে এইপ্রথমবার শাহরুখ খান বুক চাপড়ে রাজনীতির মুখোমুখি হলেন। সিনেমার মধ্য দিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লেন মরচে ধরা সিস্টেমকে।
এর আগে সিনেপর্দায় সমাজদর্শনের পাঠ পড়িয়েছেন কিং খান, কিন্তু দর্শক-অনুরাগীদের রাজনৈতিক চেতনাকে হয়তো নাড়া দেননি। এবার দিলেন। ‘জওয়ান’ (Shah Rukh Khan)-এর প্রতিটা প্লটে প্লটে সিস্টেমের মেরুদণ্ড কতটা মজবুত পরখ করে দেখার জন্য টোকা দিলেন! রোজকার ডাল-ভাতের চিন্তা করা আমজনতাকে শিখিয়ে দিলেন ‘পরিবর্তন পরিবর্তন’ করে চেঁচালেই হয় না, জনতাই আসল জনার্দন। গণতন্ত্রের আওয়াজ কতটা শক্তিশালী, নির্বিকার জনতাকে তাঁদের ভাষাতেই বুঝিয়েছেন শাহরুখ। নেপথ্যের কারিগর নিশ্চয় অ্যাটলি। তবে ‘মাস হিরো’ শাহরুখের দৌলতেই এই বার্তা তিনি পৌঁছে দিয়েছেন আমজনতার কাছে।
কোনওরকম রেয়াত না করেই ‘জওয়ান’ (Jawan)-এ সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন কিং খান- ‘দোকানে চাল-ডাল কিনতে গেলে ভাল না খারাপ প্রশ্ন করেন। দরদাম করেন, কিন্তু ৫ বছরের জন্য যখন কাউকে সরকারে আনতে ভোট দেন, তখন কি তার কাছে যাচাই করতে যান যে, বেকারত্ব ঘুচবে কিনা, শিক্ষার অধিকার পাওয়া যাবে কিনা কিংবা পরিবারের সদস্যদের কেউ অসুস্থ হলে সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে কিনা? এরপর থেকে যাচাই করে ভোট দিন।’
[আরও পড়ুন: ‘ভাবতেই পারছি না…’, ‘গদর ২’র কথা বলতে গিয়েই কেঁদে ফেললেন সানি দেওল]
সর্বপরি, আমজনতাকে আঙুলের সদ্ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ পাঠও দিয়েছে ‘জওয়ান’। চলতি ভাষায়- কাঠি না করে, গণতন্ত্রের মসনদে উপযুক্ত সরকার নির্বাচনের জন্য তর্জনী ব্যবহার করুন। আর শাহরুখের এমন রগরগে সংলাপকেই ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের বার্তা বলে মনে করছে নেটপাড়ার একাংশ। অনুরাগীদের দাবি, পরবর্তীতে ভোট দেওয়ার আগে আমজনতা কিং খানের এই সংলাপগুলি মনে রাখবেন।
প্রসঙ্গত, জওয়ান ছবিতে শাহরুখ কখনও দেশের কৃষক আত্মহত্যার পরিসংখ্যান উল্লেখ করে নির্বিকার আমজনতাকে নাড়িয়ে দিয়েছেন, আবার কখনও বা গল্পের মোচড়ে আশির দশকের আগ্নেয়াস্ত্র কেলেঙ্কারির ঘটনাও মনে করিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালের হতদরিদ্র দশার ঝলকও তুলে ধরা হয়েছে ‘জওয়ান’-এ। উল্লেখ্য, ‘স্বদেশ’ ছবির পর বহুদিন বাদে পর্দায় ‘জওয়ান’-এর হাত ধরে দেশপ্রেমের গাঁথা বুনে দিয়ে গেলেন শাহরুখ। হ্যাঁ, যিনি ‘স্বদেশ’-এর মোহন ভার্গব, ‘চক দে ইন্ডিয়া’র কবীর খান, তিনিই এবার ‘জওয়ান’-এর বিক্রম রাঠোর বা আজাদ হিসেবে আমজনতাকে তাঁদের প্রাথমিক অধিকারের বিষয়ে সচেতন করলেন।