কৃষ্ণকুমার দাস: সন্দেশখালি (Sandeshkhali) মামলায় নয়া মোড়। শাহজাহান অনুগামীদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা দায়েরের পর, ডিজি রাজীব কুমারের সাংবাদিক বৈঠকের ঠিক ১০ মিনিটের মধ্যে গ্রেপ্তার (Arrest) হলেন অন্যতম অভিযুক্ত শিবপ্রসাদ হাজরা। ন্যাজাট থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর গ্রেপ্তারির খবর নিশ্চিত করেছেন বসিরহাট জেলা পুলিশের সুপার হাসান মেহেদি রহমান। তিনি জানিয়েছেন, রবিবার শিবপ্রসাদ হাজরাকে তোলা হবে বসিরহাট আদালতে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাহজাহানের (Shahjahan Sheikh) দুই অনুগামী শিবপ্রসাদ হাজরা ও উত্তম সর্দারকে নিয়ে এলাকার মহিলাদের বিস্তর অভিযোগ ছিল। এই দুজনের মদতেই রাতে তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হতো, নির্যাতনের শিকার হতেন তাঁরা, এমনই বিস্ফোরক সব অভিযোগে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয় শেখ শাহজাহান, শিবপ্রসাদ হাজরা পুলিশের জালে ধরা না পড়ায়। দিন কয়েক আগে শাহজাহান অনুগামী উত্তম হাজরাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর বাকিদের গ্রেপ্তারিতে (Arrest) আরও সরব হন এলাকাবাসী। এমনকী তাঁদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগও ওঠে।
[আরও পড়ুন: সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতন মানল পুলিশ, ‘শাহজাহানের গ্রেপ্তারির দায়িত্ব ইডির’, বললেন রাজীব কুমার]
‘নিগৃহীতা’ এক মহিলা এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন। আর তার ভিত্তিতেই সন্দেশখালি- ২ ব্লকের তৃণমূল (TMC) সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরা ও ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হওয়া উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে অন্যান্য অভিযোগের পাশাপাশি গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মামলাও দায়ের হয়। এই খবর নিশ্চিত করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
[আরও পড়ুন: উর্দু ভাষা ও সাহিত্যে বিরাট অবদান, জ্ঞানপীঠ পাচ্ছেন গুলজার]
আর এই ঘটনার ঠিক পরেই ন্যাজাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শিবপ্রসাদ হাজরাকে। শাহজাহানের দুই অনুগামীই এখন পুলিশের নাগালে। ফলে সন্দেশখালির বাসিন্দারা কিছুটা স্বস্তিতে। বিশেষত মহিলারা অনেকটাই নিশ্চিন্ত বলে জানাচ্ছেন। এনিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ”শিবু হাজরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ রাজধর্ম পালন করেছে। সন্দেশখালিতে কেউ দোষ করলে নিশ্চিতভাবে তার শাস্তি হবে। কিন্তু সেখানকার যে রিপোর্ট আমরা পেয়েছি, তাতে কিছু কিছু জায়গায় প্রতিবেশীদের মধ্যে ঝামেলা, জমি কেড়ে নেওয়া, টাকা না দেওয়া – এধরনের অভিযোগই রয়েছে।”
শিবু হাজরার গ্রেপ্তারিতে সাময়িক স্বস্তি মিললেও এলাকাবাসীর দাবি, এলাকায় সন্ত্রাসের ‘মূল পান্ডা’ শেখ শাহজাহান গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত শান্তি ফিরবে না। তবে শাহজাহানকে গ্রেপ্তারির দায়িত্ব ইডির উপর চাপিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। তাঁর দাবি, ইডি তো শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাহলে কেন শাহজাহানকে ইডি গ্রেপ্তার করছে না?