জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ‘বিক্ষুব্ধদের বিদ্রোহে’ আপাতত বঙ্গ বিজেপি সরগরম। একাধিকবার বৈঠক করেছেন ‘বিদ্রোহী’ নেতারা। এবার শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) আয়োজিত পিকনিকে যোগ দিলেন ‘বিক্ষুব্ধ’রা। যদিও পিকনিকের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি ‘বিক্ষুব্ধ’দের। তবে বিরোধীদের দাবি, পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতেই একজোট হয়েছেন বঙ্গ বিজেপির ‘বিক্ষুব্ধ’রা।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর দক্ষিণের বিজেপি মণ্ডল সভাপতি হরিশংকর সরকারের বাড়িতে পিকনিকের আয়োজন করা হয়। পিকনিকের মূল আয়োজক শান্তনু ঠাকুর। অংশ নেন গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক আশিসকুমার বিশ্বাস, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, রাজ্য বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারি, সায়ন্তন বসুরা। পিকনিকের রাঁধুনি অবশ্য জানান, অন্তত ১৫০ জনের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজনও এলাহি। রাঁধুনি জানান, এদিনের পিকনিকে ভাত, সবজি ডাল, মাছের কালিয়া, মুরগির মাংস, স্যালাড, চাটনি, পাঁপড় ও মিষ্টির ব্যবস্থা ছিল।
[আরও পড়ুন: Abu Dhabi Drone Attack: আবু ধাবিতে ড্রোন হামলা ইয়েমেনের, মৃত দুই ভারতীয়-সহ ৩]
পিকনিক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর শোরগোল। নিছক আনন্দের জন্য যে পিকনিকের আয়োজন হয়েছে, তা মানতে নারাজ প্রায় সকলেই। তবে পিকনিকে অংশ নেওয়া বিজেপি নেতাদের দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayprakash Majumdar) জানান, “শীতকাল এসেছে তাই পিকনিক। রবীন্দ্রনাথ বলতেন চড়ুইভাতি। এটা সামাজিক চড়ুইভাতি। যাঁরা রাজনীতির লোক তাঁরা সামাজিক নন? রাজনীতির লোকেরাও তো খায় দায়, গান গায়। তাই আমরাও পিকনিক করছি।”
রীতেশ তিওয়ারির গলাতেও একই সুর। তাঁর কথায়, “কাকতালীয়ভাবে পোর্ট গেস্ট হাউসের বৈঠকের সঙ্গে পিকনিক মিলে গিয়েছে। গতবছরও হয়েছিল। তাই এবারও হচ্ছে।” এই পিকনিক “ছোটখাট গেট টুগেদার” ছাড়া কিছুই নয়, দাবি সুব্রত ঠাকুরেরও। প্রশ্ন উঠছে, যদি নিছকই আনন্দের জন্য এই পিকনিক হয়, তবে তাতে ‘বিক্ষুব্ধ’রা ছাড়া পদ্মশিবিরের আর কাউকেই দেখা গেল না কেন?
এদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি (BJP) সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের দাবি একটু অন্যরকম। তিনি জানান, “সুরের থেকে যদি বেসুর শুনতে ভাল লাগে, তাহলে মানুষের কাছে সেটাই গৃহীত হয়। ভারতীয় জনতা পার্টির এখন যা অবস্থা, তাতে হয়তো আগামী দিনে বেসুরোদের সংখ্যা বেশি হবে।” রাজনৈতিক মহল যদিও বারবার বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া শান্তনুর এই বক্তব্যকে অশনি সংকেত হিসাবেই দেখছেন।