সুকুমার সরকার, ঢাকা: শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রত্যাহার করেননি তিনি৷ এই ছিল তাঁর ‘অপরাধ’৷ শাস্তি হিসাবে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় তাঁর৷ পাঁচদিনের একটানা লড়াইয়ের পর মৃত্যু হয়েছে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর৷ তাঁর শোকস্তব্ধ পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে পাশে দাঁড়ালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
[ আরও পড়ুন: ঢাকার তরুণীকে কলকাতায় আটকে রেখে দেহ ব্যবসার অভিযোগ, আটক দম্পতি]
মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারে রাজি হননি ফেনির সোনাগাজির তরুণী৷ তাই গত ৬ এপ্রিল তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শনিবার পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ডেকে নিয়ে নুসরতের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ নুসরতকে প্রথমে সোনাগাজি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফেনি সদর হাসাপাতালে এবং পরে ওইদিন রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরতের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক৷ সুচিকিৎসার আশায় সোমবারই তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেননি চিকিৎসকরা৷ পাঁচ দিন ধরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন নুসরত৷ বুধবার সব শেষ৷ রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ নুসরতকে মৃত বলে জানান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন।
[ আরও পড়ুন: ‘গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না’, কুমতলবি সহযাত্রীকে রুখতে মহিলাদের হাতিয়ার টি-শার্ট]
মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নুসরতের আত্মার শান্তি কামনা করেন৷ তাঁর শোকস্তব্ধ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনাও জানান। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই নুসরতের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মাদ্রাসা ছাত্রীর শ্লীলতাহানির মামলায় আগেই সোনাগাজি ইসলামিয়ার সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েই তদন্ত করছে পুলিশ৷ এছাড়াও সোনাগাজি থানায় আরেকটি মামলা করেন নুসরতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। অধ্যক্ষ সিরাজ-সহ মোট আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই নুসরতের মৃত্যুর ঘটনায় সোনাগাজি থানার ওসিকেও বদলি করা হয়েছে।