সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বহাল রাখতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আপিলের রায়ের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে সংঘর্ষের ফলে যে প্রাণহানি ঘটেছে তার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন হাসিনা। এই মুহূর্তে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ। বিক্ষোভের জেরে সংঘর্ষ ও হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন। আহত ৪০০-র উপর।
গত কয়েকদিন ধরে কোটা বাতিলের দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন পড়ুয়ারা। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি অব্যাহত। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলিগের সদস্যরা। এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘কেটে কিমা করে দেব’, এবার খুনের হুমকি বাংলাদেশের মৃত সাংসদ কন্যাকে!]
এই পরিস্থিতিতে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় হাসিনা বলেন, "কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যে কাণ্ড ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গিয়েছে। কোটা সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। এই সংকটে আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের সুযোগ রয়েছে। কোটা সংস্কারের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে সন্ত্রাসীরা এই আন্দোলনের ভিতরে প্রবেশ করে হত্যা, লুটপাট করেছে। এ ঘটনায় যারাই জড়িত হোক তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে।"
এদিকে, কোটা নিয়ে এতদিন চুপচাপ থাকলেও এবার মুখ খুলেছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, "কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা সরাসরি জড়িত। বিএনপি এতে শুধুমাত্র নৈতিক সমর্থন দিচ্ছে।" এই আন্দোলনকে কেন্দ্র দেশের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হচ্ছে। গত ১ জুলাই থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। গতকাল, মঙ্গলবার তা চরম আকার ধারণ করে। প্রাণ ঝড়ে ৬ জনের। এর পর দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করে ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেরও খবর পাওয়া গিয়েছে। আতঙ্কে হোস্টেল ছাড়তে শুরু করেছেন ছাত্রছাত্রীরা।