সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমার থেকে ছোঁড়া গোলা ফের এসে পড়ল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। শুক্রবার বার্মিজ সেনার ছোঁড়া গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় এসে পড়েছে। এনিয়ে বেশকয়েকবার মায়ানমারের গোলা এসে পড়ল বাংলাদেশে।
মায়ানমারে সেনার সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের। এই অশান্তির কারণে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবিকে (BGB) হাই অ্যালার্টে রাখা হয়েছে। ঢাকায় বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, মায়ানমারের কোনও উসকানিতে পা দেবে না বাংলাদেশ। তবে অযথা অশান্তি এড়াতে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের (Rohingya) নতুন করে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য নজরদারি চালানো হচ্ছে। এই বিষয়ে আগেও মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক।
[আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোয় হামলার আশঙ্কা, বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আসরে মহিলা পরিষদ]
জানা গিয়েছে, রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোঁড়া একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে এক রোহিঙ্গা (Rohingya) কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এতে এক শিশু-সহ পাঁচ রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। নিহত কিশোরের নাম মহম্মদ ইকবাল (১৫)। সে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা শরণার্থী মুনির আহমদের ছেলে। আহত পাঁচ রোহিঙ্গাদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। এরা হলেন জাহিদ আলম (৩০), নবী হোসেন (২১), মো. আনাস (১৫) ও সাহদিয়া (৪)।
তুমব্রু সীমান্তের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, মায়ানমারের পাহাড় থেকে ছোঁড়া মর্টার শেলের আঘাতে ছ’জন রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। পরে ইকবাল নামে এক রোহিঙ্গা কিশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছেন। এক শিশু-সহ আহত পাঁচ রোহিঙ্গা বর্তমানে এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত ব্যক্তিরা একই পরিবারের সদস্য কিংবা আত্মীয় কি না, তা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে রাখাইন রাজ্যে বিমান হামলা চালাচ্ছে মায়ানমারের (Myanmar) সেনাবাহিনী। এর আগে আরাকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা মংডুতে পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে এবং সংঘর্ষে ১৯ পুলিশ আধিকারিক নিহত হন। আগস্ট মাসে পুলিশ ফাঁড়িতে অতর্কিত হামলা চালায় আরাকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা। সেখানে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম লুঠ করে তারা। জিরো লাইনের কাছাকাছি কোণারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই মুহূর্তে ৪ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন। তাঁরা আতঙ্কিত।