আকাশ মিশ্র: বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে...। ভূত আছে, নাকি নেই! এ আলোচনার অন্ত নেই। যাঁরা ভূতুরে কাণ্ড অনুভব করেছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন। আর যাঁরা দেখেনি, তাঁদের কাছে ভূতের অস্তিত্ব সংকটে। তবে গল্পের বইয়ের পাতায় কিংবা সিনেমা-সিরিজে অশরীরীদের কাণ্ডকারাখানা পড়তে বা দেখতে ভালোবাসেন কমবেশি সবাই। কিন্তু 'সত্যি ভূতে' অ্য়ালার্জি হলেও প্রায় প্রত্যেকের জীবনের একজন জলজ্যান্ত ভূত থাকে। পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও(Shiboprosad Mukherjee) তাঁর ব্যতিক্রম নন। ভূতচতুর্দশীর( Bhoot Chaturdashi) প্রাক্কালে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর সঙ্গে শেয়ার করলেন তাঁর জীবনের 'ভূতে'র কাহিনী।
সত্যজিৎ রায়ের ভূতের রাজার কথা আট থেকে আশির মুখস্থ। শিবপ্রসাদ সেই ভূতের রাজাকে চাক্ষুস না করলেও তাঁর প্রতিনিধি কিন্তু কার্যত সর্বদাই তাঁর আশপাশে বিচরণ করেন! ঘাবড়ে গেলেন? নিজের জীবনের সেই 'ভূতে'র উপস্থিতির কথা নিজেই জানালেন পরিচালক। ''আমার কাছে ভূত হল ভালো। যে ম্যাজিক জানে। আমি ভূতকে খারাপ বলে ভাবি না। আমার কাছে ভূত হল, ঠিক যেমন ভালোবেসে ব্যাঙ্ক ডাকাতি করা, ঠিক যেমন বহুরূপী ছবির বিক্রম। আমার কাছে ভূতও তেমন হবে। যে ভয় দেখাবে না। মিষ্টি ভূত। যে সব কাজ করে দেবে। আমার শুটিং টিমে গণেশ বলে একজন আছে। গণেশ আমার কাছে অনেকটা এই মিষ্টি ভূতের মতো। শুটিংয়ে আমার যদি একটা লেবু দরকার হয়, কোথা থেকে যেন একটা লেবু গণেশ নিয়ে আসত। সেই ছোটবেলায় পড়া গল্পের মতো। আমি যদি কখনও শুটিংয়ে গিয়ে গণেশকে বলি, কালোজিরের ভার্তা খেতে ইচ্ছে করছে বা মনে মনেও ভেবেছি। দেখি লাঞ্চে কালোজিরে ভার্তা চলে এল। জানি না ও কীভাবে জানতে পারে! গণেশকে আমার একটু ভূতের মতো লাগে। এটা কিন্তু একটা ভৌতিক ব্যাপার।'' মজা করে বলেন শিবপ্রসাদ।
তবে ছোটবেলার ব্রহ্মদৈত্য দেখার অভিজ্ঞতাও ভোলেননি তিনি। পরিচালক জানালেন, ''আমি ঠিক ভূতে বিশ্বাস করি না। কিন্তু কিছু ঘটনা ছোটবেলায় ঘটেছিল, যাকে ভৌতিক বলাই যেতে পারে। আমার পিসিমার বাড়িতে একটা বেলগাছ ছিল। ছোটবেলায় আমাকে বলা হয়েছিল, সেই গাছে ব্রহ্মদৈত্য রয়েছে। ওই বয়সে ব্রহ্মদৈত্য কি ব্যাপারটা ঠিক বুঝতাম না। তবে পিসিমার বাড়ি গেলেই, গাছটির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। একবার মনে আছে, তখন সন্ধে হয়েছে সবে। পিসিমার ঘর থেকে বেরিয়ে অন্য ঘরে যাচ্ছিলাম। তখন হঠাৎ মনে হল, ওই বেল গাছে কেউ একটা বসে বসে পা দুলোচ্ছে। আমি পরিষ্কার দেখেছিলাম, কেউ একজন বসে আছে। আর তার পায়ে খরম ছিল। সেই সময় বেশ ভয় লেগেছিল।''