সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দিব্যেন্দু মজুমদার: দু’মাসও হয়নি তৃণমূলের (TMC) সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছেদ করে গেরুয়া শিবিরের পথে পা বাড়িয়েছিলেন বাঁকুড়া (Bankura) জেলার তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ভোটের সময় এগিয়ে আসতেই অচিরে মোহভঙ্গ তাঁর। একুশের ভোটে টিকিট না পেয়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন তিনি। কোটি টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রি হয়েছে হলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। সোমবার দুর্গাপুর রেসিডেন্সিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব অভিযোগ করেন। বলেন, ”সাড়ে তিন কোটি টাকায় টেন্ডার হয়েছে। টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে।”
গত ডিসেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে (BJP) যোগদানের পরপরই বাঁকুড়ার বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও একই পথে হাঁটেন। শুভেন্দুই তাঁর রাজনৈতিক পথপ্রদর্শক, একথা জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্পর্শ ত্যাগ করেছিলেন তিনি। যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু একুশের ভোটে (WB Assembly Polls) প্রার্থী হতে পারেননি। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, আগের দিন রাতে যিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তন্ময় ঘোষ নামে সেই ব্যক্তিকে বিষ্ণুপুর থেকে বিজেপির প্রার্থী করা হয়েছে। তাতেই তিনি কোটি টাকায় টিকিট বিক্রির অভিযোগ তুলেছেন। তবে কি পুরনো দলে ফিরছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রবীণ নেতা জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহত। এই মুহূর্তে তিনি আহত। তাই তাঁকে দেখতেই এসেছেন। তিনি এও জানান যে বিজেপিতে যোগ দিলেও সদস্যপদ নেননি। যদিও গেরুয়া শিবিরের ফাঁকফোকর ইতিমধ্যেই যে বেশ টের পেয়েছেন দুঁদে রাজনীতিক, তা স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: প্রযুক্তির আশীর্বাদ, একুশের ভোটে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমল ‘শ্যাডো জোন’]
অন্যদিকে, হুগলিতে বিজেপি প্রার্থীদের নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। সিঙ্গুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নিয়ে সবচেয়ে গোল বেধেছে। তাঁকে প্রার্থী হিসেবে মানতে নারাজ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। হুগলি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সঞ্জয় পাণ্ডে প্রার্থী হবেন বলে আশা ছিল সকলের। কিন্তু তা না হওয়ায় তিনি বেজায় ক্ষুব্ধ। রবিবার রাতে জেলা কার্যালয়ে বৈঠকের সময়েই তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অবিলম্বে সিঙ্গুর থেকে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের প্রার্থীপদ প্রত্যাহার না করা হলে তিনি ও অন্যান্য মণ্ডল সভাপতিরা সবাই মিলে ইস্তফা দেবেন এবং নির্দলের হয়ে লড়বেন। সিঙ্গুরের পাশাপাশি তৃণমূল থেকে আগত প্রবীর ঘোষালকে উত্তরপাড়ার প্রার্থী করা নিয়েও বিস্তর সমস্যা দলের অন্দরে। অনেকেই তাঁর বদলে স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে সকাল থেকে বিক্ষোভ চলছে।