সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: সব মিলিয়ে মেরে-কেটে মিনিট ছয়। তার মধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য লুকিয়ে রয়েছে অসীম মমতা। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সহানুভূতি এবং তাদের জন্য একটু সহযোগিতার আবেদন। আর এই পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা নিয়েই একটা শর্ট ফিল্ম তৈরি করে ফেললেন শিলিগুড়ির উঠতি চিত্রনির্মাতা শ্রেয়সী চন্দ।
বিষয়ের সঙ্গেই সাযুজ্য রেখে শর্ট ফিল্মটির নামও রেখেছেন ‘পরিযায়ী’। মাত্র ছয় মিনিটের এই ছবি দিয়েই বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছেন শ্রেয়সী। মোট চারটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে গল্প। এই ফিল্মটি ইউটিউবে মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই লাইক, ভিউয়ের বন্যা বয়ে গিয়েছে একপ্রকার। প্রশংসা আদায় করে নিয়েছেন চিত্র সমালোচকদের কাছ থেকেও। শুটিং হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই।
আর এই শর্টফিল্মটি তৈরি করতে সেখানেই অভিনবত্বের পরিচয় দিয়েছেন শ্রেয়সী। লকডাউনের মধ্যে চরিত্ররা একে অপরের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ না করেই শুটিং করেছেন। প্রত্যেকেই নিজের বাড়ি থেকে নিজের অংশটুকু শুট করে পাঠিয়ে দিয়েছেন শ্রেয়সীর কাছে। গোটা ছবিটাই শুটিং হয়েছে মোবাইল ক্যামেরায়। পাঠিয়ে দেওয়া অংশগুলো শ্রেয়সী নিজে হাতে জুড়ে সেটিকে পূর্ণাঙ্গ সিনেমার রূপ দিয়েছেন। সাদামাটা, অনাড়ম্বর হলেও চরিত্র-চিত্রণ, অভিনয় এবং প্রাসঙ্গিকতার গুরুত্বে শর্টফিল্মটি মনোগ্রাহী এবং তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
পরিযায়ী প্রসঙ্গে শ্রেয়সী জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমে একের পর এক পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার কথা জানতে পারছি। তখন থেকেই তাদের জন্য কিছু একটা করার ভাবনা চাগাড় দিয়েছিল। চেয়েছিলাম, তাদের প্রতি মানুষের ভুল ধারণা যাতে ভাঙে সেই বিষয়ে কিছু করার। তখনই এই শর্টফিল্মের ভাবনা।
উল্লেখ্য, শ্রেয়সী নিজেও একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফিল্মটিতে। মূল চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন, সেই দেবর্ষি কানুনগো জানালেন, এই সময়ে গল্পটি খুব প্রাসঙ্গিক। তাই নির্দ্বিধায় রাজি হয়ে গিয়েছি। পরিযায়ী শ্রমিকরা আসলে পরিযায়ী নয়, তারা পেটের টানে অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করছে। তাঁদের ‘পরিযায়ী’ আখ্যা দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়েই আমাদের প্রতিবাদ ফুটে উঠবে এই সিনেমাটির মধ্য দিয়ে। আমাদের নিজেদের পরিবারের ওপর যখন আঘাত আসে তখনই আমরা এর গুরুত্ব বুঝতে পারি। তাই একটু কটাক্ষের ভঙ্গিতে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এই ছবিতে। একজন মেটেলি, একজন ধুপগুড়ি, শ্রেয়ষী এবং দেবর্ষি শিলিগুড়ির বাসিন্দা। চার জনই নিজ এলাকা থেকেই নিজেদের অংশ শুট করেছেন। তাই এইভাবে শুটিং করার যে একটা অন্যরকম এক্সপেরিয়েন্স রয়েছে, সেকথাও একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁরা।
শ্রেয়সী ইতিমধ্যেই একাধিক বাংলা টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন। এটি তার চতুর্থ শর্ট ফিল্ম। এর আগে অন্য একটি শর্ট ফিল্মের জন্য প্রশংসিত এবং পুরস্কৃতও হয়েছেন।
The post পরিযায়ী শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে শর্ট ফিল্ম, নেটদুনিয়ায় প্রশংসিত ৬ মিনিটের ছবি appeared first on Sangbad Pratidin.