স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: সিবিআইয়ের পর ইডি। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকারের আমলে আরও এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সামনে এল। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সমীক্ষা অনুযায়ী, মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বের ইউপিএ সরকারের আমলে এক দশকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট ২৬ জন নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। অথচ নরেন্দ্র মোদির আমলে গত আট বছরে শুধুমাত্র কংগ্রেসেরই ২৪ জন নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। অন্যান্য দল জুড়লে সংখ্যাটা ১২১। উল্লেখযোগ্য দিক হল, এই শতাধিক নেতার মধ্যে বিজেপির মাত্র তিনজন।
বস্তুত, দেশের বিরোধী দলগুলি বরাবরই এই অভিযোগ তুলে থাকে যে, বিরোধীদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবেই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে থাকে মোদি সরকার। তাদের কথায়, এটা বিজেপির (BJP) ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে তেমন সক্রিয় নয় ইডি (ED) বা সিবিআই (CBI)। এমন বহু নজির সাম্প্রতিককালে রয়েছে, বিরোধী দল ছেড়ে কোনও নেতা বিজেপিতে যোগ দিলে, তাঁর বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ ‘হালকা’ হয়ে গিয়েছে। তদন্ত থেকে তাদের দূরেই রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিরোধীদের কটাক্ষ, বিজেপি নেতারা যে ওয়াশিং মেশিনে শুদ্ধ! সর্বভারতীয় সংবাদপত্রটির সমীক্ষা রিপোর্টে এবার কার্যত সিলমোহর পড়ল বিরোধীদের অভিযোগেই।
[আরও পড়ুন: যৌনতার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যুবতীকে ‘খুন’! গ্রেপ্তার উত্তরাখণ্ডের বিজেপি নেতার ছেলে]
ওই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট বলছে, গত ১৮ বছরে কংগ্রেস আমলে বা বিজেপি জমানায় ২০০-র বেশি রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারি, তাঁদের বাড়িতে হানা, জেরা ইত্যাদি করেছে সিবিআই। তার মধ্যে ৮০ শতাংশই বিরোধী দলের। কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্বাধীন ইউপিএ (UPA) সরকারের আমলে দশ বছরে (২০০৪-২০১৪) অন্তত ৭২ জন নেতা ছিলেন সিবিআইয়ের নজরে। তার মধ্যে ৪৩ জন (৬০ শতাংশ) বিরোধীপক্ষের। ২৯ জন ছিলেন কংগ্রেসের বা শরিক দলের।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে হবু বরের সামনেই তরুণীর শ্লীলতাহানি, বারবার হাতজোড় করেও মিলল না রেহাই!]
এই প্রসঙ্গেই কংগ্রেস হাতিয়ার করছে তাদের আমলে কেন্দ্রীয় সংস্থার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ থাকার বিষয়। বলা হচ্ছে, ডা. মনমোহন সিংয়ের আমলে ইডির তদন্তে সুরেশ কালমাডি, অশোক চৌহান, পবন কুমার বনশল, নবীন জিন্দাল ও বিজয় দারদা– এই পাঁচ কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছিল। ইউপিএর শরিক ডিএমকের (DMK) চারজন ও তৃণমূল কংগ্রেসের সাতজন নেতার বিরুদ্ধেও সেই সময় মামলা করেছিল ইডি (ED)। সেই তালিকায় সর্বভারতীয় দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে কম (তিন) মামলা হয়েছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। অথচ মোদির আমলে পুরোটাই পক্ষপাতদুষ্ট। মোট অভিযুক্তের ৯৫ শতাংশেরও বেশি বিরোধী দলের নেতা। যাঁদের মধ্যে আছেন সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi), অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পাওয়ার, ফারুক আবদুল্লা, পিনারাই বিজয়নের মতো নেতার নাম। বাকি যে পাঁচ শতাংশ, তার মধ্যে বিজেপির বর্তমান ও প্রাক্তন সহযোগী দলের নিচুস্তরের কয়েকজন।