সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “বড় লোকের বিটি লো, লম্বা লম্বা চুল, এমন মাথায় বেঁধে দেবো লাল গেঁদাফুল…” বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ট্রেন্ডিং। বাংলা লোকগীতিকে নিজের ব়্যাপে ব্যবহার করে নয়া মোড়কে শ্রোতাদের কাছে নিয়ে এসেছেন ব়্যাপার বাদশা। আর তাই এই ‘গেন্দাফুল’ গানটির জন্যে গেরোয় পড়তে হয়েছে তাঁকে। কারণ এই লোকগীতি যাঁর সৃষ্টি, রতন কাহার, গানের কোথাও তাঁর নামোল্লেখ করা নেই। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই খ্যাতনামা ব়্যাপার বাদশার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩১ মার্চ ‘গেন্দাফুল’ গান এবং বাংলার রতন কাহার প্রসঙ্গে মুখ খুলতে বাধ্য হন বাদশা।
বাদশার কথায়, এই গানটি যে রতন কাহারের লেখা সেটা তিনি জানতেন না। এর আগে বহুবার এই গান তিনি শুনেছেন এবং ইউটিউবে এই গানের বহু রিমেকও রয়েছে। তার মূল কারণ, সব ক্ষেত্রেই শুধু উল্লেখ রয়েছে, এটি ‘বাংলার লোকগীতি’, কিন্তু কোনওটাতেই গানের রচয়িতার নাম নেই। প্রসঙ্গত, দুবছর আগে একটি বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতেও এই গানের কথা নিয়ে রিমিক্স করা হয় এবং সেখানেও রতন কাহারের কোনও নাম ছিল না। স্বাভাবিকবশতই মূল সত্যিটা বাদশারও নজরের আড়ালেই রয়ে যায়। তবে ‘গেন্দাফুল’ বাজারে হিট হতেই বাদশার নামে গান চুরির অভিযোগ ওঠে। তারপরই বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে, রীতিমতো নেট ঘেঁটে বাদশা রতন কাহার সম্পর্কে জানতে পারেন। তাঁকে নিয়ে যে তথ্যচিত্র রয়েছে, সেটাও দেখেছেন। তবে ঘটনা যাই হোক না কেন, বাদশা কিন্তু রতন কাহার প্রসঙ্গে জানতে পেরে মুগ্ধ হয়েছেন। আর তাই একথাও জানিয়েছেন যে বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে তিনি নিজে গিয়ে রতন কাহারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। তিনি প্রস্তুতও। আরজি জানিয়েছেন কোনও সহৃদয় ব্যক্তি যদি তাঁকে শুধু শিল্পী রতনের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতেন পারেন তো।
[আরও পড়ুন:মানবিক নুসরত, ভিন রাজ্যে আটকে পড়া বাংলার শ্রমিকদের পাশে বসিরহাটের সাংসদ ]
পাশাপাশি, বাদশা এও বলেন যে, গানের মাত্র দুটি লাইনই নিয়েছেন কিন্তু দুটি হোক বা একটি, তার জন্য আসল রচয়িতা রতন কাহারকে অবজ্ঞা করার কিংবা গান চুরি করার কোনওরকম অভিপ্রায়ই তাঁর ছিল না। তাই বাংলার শিল্পী রতন কাহারকে সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত তিনি। কারণ, তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ভাষাভাষির লোকশিল্পীদের গান শুনতে তিনি ভালবাসেন। এর পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে বাদশা এও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলার লোকগীতিতে ব্যবহৃত দোতারা যে বাদ্যযন্ত্রকে মানুষ প্রায় ভুলতেই বসেছেন, আমি দেশ-বিদেশ সকলের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছি। আর মাটির গানের সেই ঐতিহ্য বজায় রাখতে বাংলার প্রবীণ দোতারাবাদক তাপস রায়েরও সাহায্য নিয়েছি।
বাংলার মাটির গন্ধ লেগে থাকা এই গান যার সৃষ্টি, মিউজিক ভিডিওর কোথাও তাঁর নামের উল্লেখ নেই। প্রচারের আলো থেকে শতহস্ত দূরে থাকা রতন কাহারকে তাঁর প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেছে বাদশা.. এখনও যার নিত্য দিন গুজরান হয় অভাবের মাঝে। সেই শিল্পীরই গানের কথা বসিয়ে ব়্যাপ বানিয়ে সুপারহিট এই গানের মুনাফা তুলছেন বাদশা এবং সোনি মিউজিক ইন্ডিয়া, অথচ স্রষ্টা রতন কাহারের নামটুকু সৌজন্যমূলকভাবে উল্লেখ করলেন না ভিডিওয়! এহেন যাবতীয় মন্তব্যে ছেয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ৩১ মার্চ একটি ফেসবুক লাইভ করে, বাদশা সেসব প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন।
[আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপে প্রেসক্রিপশন পাঠালেই মিলবে ওষুধ, অভিনব উদ্যোগ সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর ]
The post ‘কোথাও ওঁর নাম ছিল না’, বিতর্কে জড়িয়ে রতন কাহারকে সাহায্যের ইচ্ছেপ্রকাশ ব়্যাপার বাদশার appeared first on Sangbad Pratidin.