সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার সকালে মুম্বইয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মিঠুন চক্রবর্তীর মা। কলকাতার জোড়াবাগানে মিঠুনের পাশের বাড়িতেই থাকতেন শিলাজিৎ। শিলাজিতের বাড়িতে দিব্যি আসা-যাওয়া ছিল মিঠুনের শান্তিরানি দেবীর। তাঁর মৃত্য়ুর খবর পেয়ে সোশ্য়াল মিডিয়ায় স্মৃতিচারণা করলেন শিলাজিৎ।
শিলাজিৎ লিখলেন, ”ছোটবেলায় দুজন কে ভীষণ ভয় পেতাম।এক ছিল আমার সেজো মামিমা ,ডাকলেই হিম হয়ে যেত হাড়।আর একজন শান্তি দিদা ,মা ডাকতো শান্তি মাসি বলে আমিও ডেকে ফেলতাম মাঝে মধ্যে।দিদার চোখের দিকে তাকালেই কিরকম একটা হতো।ওনার ঢলঢলে চোখে একটা সম্মোহনী দৃষ্টি ছিল।মা তো বদমায়েশি কিছু করলেই ভয় দেখাতো শান্তি দিদা কে বলে দেবো।এই দিদা রত্নগর্ভা,খুবই কষ্টে মানুষ করেছিলেন তার তিন মেয়ে আর এক ছেলে কে।ছেলে বিখ্যাত হয়ে যাওয়ার পর তিনি আমাদের পাড়ার লোক বলেই অহঙ্কারে ফেটে পড়তাম আমরা।কিন্তু শান্তি দিদা বদলাননি ,ছেলে বিশ্ব বিখ্যাত হওয়ার পর ও কোনোদিন অনেক দেখে বোঝা যায় নি উনি সুপারস্টার মিঠুন এর মা।”
[আরও পড়ুন: ‘নবনীতাকে সিঁদুর পরানোর সময়ে হাত কাঁপছিল…’! জিতুর পুরনো ভিডিও নিয়ে শোরগোল]
শিলাজিৎ আরও লিখলেন, ”আমার ছোটো বেলার ভালো লাগার চরিত্র দের মধ্যে উনি ছিলেন একজন।ভয় পেতাম শান্তি দিদা কে কিন্তু ভালো বাসতেন আমাদের।আমাকে বলে নয় সবাই কে।ওনার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এরকম কেউ ওনার পরিচিত ছিল বলে আমি জানিনা।ওনার নাম শুধু শান্তি ছিল না উনি মাথায় হাত দিলে মনে হতো শান্তি পেতাম।একটু আগে মায়ের থেকে খবর পেলাম।শান্তি দিদা চলে গেলো।মায়ের যথারীতি মন টা ভালো নেই। পুরনো অ্যালবাম থেকে এই ছবি টা মা পাঠালো আমাকে।দেখা হতো না কিন্তু মনে থাকতেন, খবর নিতাম।মন টা খারাপ হয়ে গেলো। পৃথিবী একজন মা কে হারালো। এরকম স্নেহময়ী নিরহংকারী মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। প্রণাম।”
কলকাতার জোড়াবাগান এলাকায় চার ভাই-বোন এবং মা-বাবার সঙ্গেই থাকতেন মিঠুন। জীবনে প্রতিষ্ঠীত হওয়ার লড়াইয়ে বরাবরাই মাকে পাশে পেয়েছিলেন। কলকাতা থেকে মাকে মুম্বইয়েও নিয়ে যান তিনি। ছেলে যেখানে প্রতিষ্ঠীত, যে শহরে ছেলের স্বপ্নপূরণ, সেই শহরেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন শান্তিরানি দেবী।
খবর নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর আগে সংবাদ মাধ্যমকে মিঠুনের ছোট ছেলে নমশি জানিয়েছেন, ”ঠাকুমা আর নেই।”
মিঠুনের মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে টুইটে শোকপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, ‘‘মাতৃবিয়োগের জন্য মিঠুন চক্রবর্তীকে জানাই আন্তরিক সমবেদনা। আশা করি, মিঠুনদা ও তাঁর পরিবার এই গভীর শোক সামলে উঠবেন।’’
ইদানিং টেলিপর্দায় ডান্স বাংলা ডান্স শোয়ের বিচারকের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন মিঠুন। সম্প্রতি এই শোয়ের বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছিলেন তিনি। ছোটবেলার নস্ট্যালজিয়ায় ভেসে মায়ের গল্পও করেছিলেন।