রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ফের অধিকারীদের ডানা ছাঁটল রাজ্য! দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হল শিশির অধিকারীকে (Sisir Adhikari)। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পেলেন অখিল গিরি। এই অপসারণ অধিকারী পরিবারের সঙ্গে রাজ্যের দূরত্ব বাড়ার ইঙ্গিত বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের।
কয়েকমাস আগে শিশিরপুত্র শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কারণ, দলের পতাকা ছাড়াই মিটিং-মিছিলে দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। পরবর্তীতে ‘দাদার অনুগামী’দের বার্তা অনেকটাই স্পষ্ট করেছিল শুভেন্দুর অবস্থান। পরে মন্ত্রিত ত্যাগ করেন তিনি। ছাড়েন বিধায়ক-সহ যাবতীয় পদ। তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদও ছাড়েন। হাতে তুলে নেন পদ্মশিবিরের পতাকা। সেই ঘটনার পর বারবার অধিকারী পরিবারের বাকি তিনজন, অর্থাৎ শিশির অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন তাঁরা দিদির সঙ্গেই রয়েছেন। কিন্তু শাসকদলের কোনও সভায় বা মিছিলে তাঁদের দেখা মেলেনি। স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয় রাজনৈতিক মহলে। অনেকেই দাবি করেন, অধিকারী পরিবারের বাকি তিন সদস্যও তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: ঘনিষ্ঠ ভিডিও ভাইরালের হুমকি, সালিশি সভায় ছাত্রীকে বিয়ের জন্য ‘চাপ’, আত্মঘাতী শিক্ষক]
এই টানাপোড়েনের মাঝে কিছুদিন আগে কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে শিশিরপুত্র সৌমেন্দুকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও। দাবি করেন, অখিল গিরির মিথ্যে অভিযোগের কারণেই অনিয়মের শিকার হতে হচ্ছে তাঁর ভাইকে। মুখ্যমন্ত্রীকে এই বিষয়ে চিঠিও লেখেন। ঘটনার জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। পরবর্তীতে দেখা যায় দাদা শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন সৌমেন্দু। তবে এখনও শাসকদলের সৈনিক শিশির ও দিব্যেন্দু। তা সত্ত্বেও সোমবার রাতে দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে শিশির অধিকারীকে অপসারণের নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় অখিল গিরিকে। বর্তমানে এই অখিল গিরির উপরই নন্দীগ্রামের দায়িত্ব দিয়েছে শাসকদল। অধিকারীদের উপর তৃণমূলের ভরসায় যে ফাটল ধরেছে, এই অপসারণ তারই ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এবিষয়ে এখনও শিশিরবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বর্তমানে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় রয়েছেন তিনি।