ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আরও কোনঠাসা করা হল অধিকারীদের। এবার সাংগঠনিক পদ থেকে সরানো হল শিশির অধিকারীকে (Sisir Adhikari)। পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদ থেকে তাঁকে অপসারণ করে দায়িত্ব দেওয়া হল সৌমেন মহাপাত্রকে। এই অপসারণ অধিকারী পরিবারের সঙ্গে রাজ্যের দূরত্ব আরও স্পষ্ট করল বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের।
কয়েকমাস আগে শিশিরপুত্র শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কারণ, দলের পতাকা ছাড়াই মিটিং-মিছিলে দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। পরবর্তীতে ‘দাদার অনুগামী’দের বার্তা অনেকটাই স্পষ্ট করেছিল শুভেন্দুর অবস্থান। পরে মন্ত্রিত ত্যাগ করেন তিনি। ছাড়েন বিধায়ক-সহ যাবতীয় পদ। তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদও ছাড়েন। হাতে তুলে নেন পদ্মশিবিরের পতাকা। সেই ঘটনার পর বারবার অধিকারী পরিবারের বাকি তিনজন, অর্থাৎ শিশির অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন তাঁরা দিদির সঙ্গেই রয়েছেন। কিন্তু শাসকদলের কোনও সভায় বা মিছিলে তাঁদের দেখা মেলেনি। ফলে তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ক্রমশ বাড়তে থাকে জল্পনা। পরবর্তীতে অধিকারী পরিবারের ছোট ছেলে সৌমেন্দুকে সরিয়ে দেওয়া হয় কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে। এতেই রাজ্যের সঙ্গে অধিকারী পরিবারের সম্পর্কের ফাটল চওড়া হয় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই অপসারণের জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। পরে শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপিতে যান সৌমেন্দুও।
[আরও পড়ুন: ‘স্বাস্থ্যসাথীর বিরোধী নই, সুযোগ পেলে আমিও কার্ড করব’, দিলীপ ঘোষের গলায় ভিন্ন সুর!]
এই টানাপোড়েনের মাঝে সোমবার রাতে রাজ্যের তরফে দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে শিশির অধিকারীকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একদিনের ব্যবধানে জেলা সভাপতি পদ থেকেও সরানো হল তাঁকে। যদিও নতুন কমিটিতে চেয়ারম্যান পদে রাখা হয়েছে শিশিরবাবুকে। আদতে অধিকারীদের ক্ষমতা খর্ব করতেই রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। ওয়াকিবহল মহলের মত, শুভেন্দু ও সৌমেন্দুর বিজেপি যোগের কারণেই তৃণমূলে থেকেও দলের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে শিশিরবাবুর। প্রসঙ্গত, বুধবার ভগবানপুরের সভা থেকে শাসকদলকে একহাত নিয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে বলেন, “শুধু ভোটের আগেই নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়ে মিথ্যাশ্রী, কুৎসাশ্রীর জনক মাননীয়ার।”