সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: মাওবাদীদের (Maoist) নামে ভয় দেখিয়ে তোলা আদায়ের চেষ্টায় অভিযুক্ত খোদ পুলিশকর্মীই। ঝাড়গ্রামে (Jhargram) এক হোমগার্ড-সহ গ্রেপ্তার ৬ জন। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে টাকা, আগ্নেয়াস্ত্র, মোবাইল ফোন। ঝাড়গ্রাম পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে অন্যতম জামবনি থানার হোমগার্ড বাহাদুর মান্ডি। শনিবার সকালে মাওবাদীদের নাম পোস্টার লাগানো হচ্ছিল এলাকায়, তাতেই হাতেনাতে ধরা পড়ে বাহাদুর ও তার সঙ্গীসাথীরা। ধৃতদের আদালতে পেশ করা হবে।
ঝাড়গ্রামের একদা মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে সম্প্রতি ফের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মাওবাদীদের নামে ফোন করে হুমকি, চিঠি পাঠানো, টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেওয়া – এমন বেশ কিছু কার্যকলাপ ফের দেখা যাচ্ছিল। পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, জামবনি থানার হোমগার্ড (Home Guard) বাহাদুর মান্ডিই এসব কাজের মূল চক্রী। এরপর শনিবার সকালে মাওবাদীদের নামে পোস্টার লাগাতে গিয়ে একেবারে হাতেনাতে ধরা পড়ে বাহাদুর। পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ৫ জনকে। তাদের নাম শংকর মণ্ডল, মলয় কর্মকার, মহেন্দ্র হাঁসদা, বাবলু দলই, বাবুলাল সরেন।
[আরও পড়ুন: প্রতিবেশী বউদির সঙ্গে পরকীয়া, যুবক-যুবতীকে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে বেধড়ক মার]
এপ্রিল মাস এবং তার আগে এলাকায় যেসব পোস্টার দেওয়া হয়েছিল তার দিন পনেরো আগে বিনপুর থানা এলাকার একটি গ্রামীণ হাটে মদ-মাংসের আয়োজন করে বাকি ধৃতদের নিয়ে পরিকল্পনা করেছিল। বাইকে বা সাইকেলে পোস্টারগুলি মূলত বিনপুর থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে সাঁটানো হয়েছিল এবং মাওবাদীদের নাম করে বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্যে ছিল তীব্র আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা। এভাবে একজনের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকাও তুলেছিল তারা। শনিবার সেই টাকা পুলিশ উদ্ধার করেছে।
[আরও পড়ুন: হায়দরাবাদে বিজেপি-টিআরএস হোর্ডিং যুদ্ধ! গেরুয়া শিবিরকে পালটা খোঁচায় বাজিমাত কেসিআরের]
পুলিশ জানিয়েছে ধৃত ছ’জনের মধ্যে পাঁচ জন সরাসরি যুক্ত।এদের মধ্যে শিলদার মলয় কর্মকার ভুয়ো স্ট্যাম্প তৈরি করে হাজার টাকা পেয়েছিল। পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প, একটি দেশি বন্দুক, পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা, একটি মোবাইল উদ্ধার করেছে। এরা মোবাইলের সিম বদল করে মানুষকে হুমকি দিত। এদের এদিন শনিবার পুলিশ ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলে।
ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, “এরা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে মানুষকে ভয় দেখিয়ে টাকা তুলতে চেয়েছিল। হুমকি চিঠি, ফোন করত। একজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছিল। আমরা পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা উদ্ধার করেছি। আরও কয়েকজন আছে, তাদেরও আমরা খুব শিগগিরই গ্রেপ্তার করব।”