অর্ণব আইচ: সেই লালগোলা। সেই জেএমবি (JMB)। সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে ফের রাজ্যে জেএমবি জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ নিয়ে সতর্কবার্তা। মুর্শিদাবাদের লালগোলা সীমান্ত দিয়েই অনুপ্রবেশ করেছে নব্য জেএমবির (Neo JMB) ৬ জন সদস্য! কিন্তু তারা কোথায় গা-ঢাকা দিয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন গোয়েন্দারা। ফলে ২৬ জানুয়ারির আগে ফের রাজ্যের নিরাপত্তা বাড়ল কয়েকগুণ।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি লালগোলা (Lalgola) সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে ৬ জন নব্য জেএমবির সদস্য। মালদহ ও মুর্শিদাবাদের কোনও রেলস্টেশনে নাশকতা চালাতে পারে তারা। এ ছাড়াও রাজ্যের কোনও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তারা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ঘটানোর চেষ্টা করতে পারে, এমন সম্ভাবনাও গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। সেইমতো ইতিমধ্যেই মালদহ, মুর্শিদাবাদের একাধিক স্টেশনে জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট, পুলিশ সূত্রে খবর এমনই।এছাড়া কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলেও অতিরিক্ত সতর্ক হয়েছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বাবুল-শুভেন্দুর পালটা কর্মসূচি ঘোষণা, ফের তৃণমূলের হয়ে মাঠে নামার ইঙ্গিত জিতেন্দ্রর]
গোয়েন্দাদের সূত্রে খবর, খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর তদন্তে জানা গিয়েছিল, লালগোলার সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে কাপড়ের আড়ালে হ্যান্ড গ্রেনেড পাচার করেছিল জঙ্গি সংগঠন জামাত উল মুজাহিদিন (বাংলাদেশ)। লালগোলা সীমান্তের অনেকটাই জলপথ। নদী পেরলেই বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা। শীতকালে ঘন কুয়াশার মধ্যে ওই রুট ধরে চোরাপথে বাংলাদেশ থেকে এই রাজ্যে আসা খুব শক্ত কাজ নয় বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের। তাঁদের মতে, এই ৬ জঙ্গি এই রুট ধরেই সম্ভবত প্রবেশ করেছে এই রাজ্যে। এরপর তারা কোথায় গা ঢাকা দিয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
[আরও পড়ুন: গুড়-বাতাসা অতীত, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে চকলেট-বিস্কুট-জলের দাওয়াই অনুব্রতর]
২০১৯ সালের জুন মাসে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল নব্য জেএমবির চার সদস্য। তাদের মধ্যে তিনজনই বাংলাদেশি, যারা চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে এসেছিল। তখন থেকেই জানা যায়, এই রাজ্যে নব্য জেএমবি নতুন করে স্লিপার সেল তৈরি করছে। এমনকী, কয়েকটি জেলায় নতুন মডিউলও তৈরি করার চেষ্টা চলছে। গোয়েন্দাদের মতে, এর মধ্যে নব্য জেএমবি রাজ্যে জঙ্গি মডিউল তৈরি করেছে। তার উপর ভিত্তি করেই তারা নাশকতার ছক কষেছে, এমন সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্রের খবর, গত বছরই নব্য জেএমবি নিজেদের নতুন সংগঠন বা ‘সুরা’ তৈরির ঘোষণা করে। আবুল আব্বাস আল বাঙালি হাফিজুল্লাহ নামে বাংলাদেশের এই জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষনেতার নির্দেশে আবু আমির, আবু আদনান, আবু দুজানা, আবু আহসান নামে পাঁচ জঙ্গি নেতা বিভিন্ন ধরনের নাশকতার ছক কষছে, এমনই অভিযোগ উঠেছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, যে ৬ জন জঙ্গি এই রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেছে বলে খবর, তাদের এই ‘সুরা’র সদস্য বা সংগঠনের নেতারাই নাশকতার নির্দেশ দিয়েছে। সেইমতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে তল্লাশি শুরু করেছেন গোয়েন্দারা।