সন্দীপ চক্রবর্তী: এতটা বোধ হয় রাজ্য সরকারি কর্মীরাও প্রত্যাশা করেননি। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ উপচে দিয়ে বেতনবৃদ্ধির ঘোষণা করল রাজ্য। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এবং প্রায় সবক্ষেত্রেই কমিশনের সুপারিশের তুলনায় বেশি বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চালু হবে নতুন বেতনকাঠামো। বৈঠক শেষে একথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
[আরও পড়ুন: ‘অযথা ভয় নয়, এখানে এনআরসি হতে দেব না’, রাজ্যবাসীকে আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর]
অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বাধীন পে কমিশন একলাফে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন অনেকটাই বাড়ানোর সুপারিশ করেছিলেন। যা উপচে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি কর্মীদের বেসিক বেতন ২.৫৭ গুণ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছিল। তা মেনে নিয়ে রাজ্য সরকার মূল বেতন ২.৮০৯ গুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ আগে যে বেতন ছিল ১০০ টাকা তা এখন বেড়ে হচ্ছে ২৮০ টাকা ৯০ পয়সা। ১০০ টাকার উপর মহার্ঘ্য ভাতা ছিল ১২৫ টাকা। যা জুড়ে দেওয়া হচ্ছে এবং তাঁর উপর বেতনবৃদ্ধি ১৪.২ শতাংশ। অর্থাৎ মোট দাঁড়াচ্ছে ২৫৭ টাকা। তাঁর সঙ্গে তিন বছরের ৩ শতাংশ করে ইনক্রিমেন্ট (নোশনাল ইনক্রিমেন্ট) জোড়া হচ্ছে। অর্থাৎ মোট বেতন গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ২৮০ টাকা ৯০ পয়সা। নতুন বেতন কাঠামোতে হাউস রেন্ট অ্যালউয়েন্স বা বাড়িভাড়া ভাতা ঠিক করা হয়েছে মূল বেতনের ১২ শতাংশ। এবং এর সর্বোচ্চ সীমাও বাড়ানো হয়েছে। বাড়িভাড়ার সর্বোচ্চ সীমা আগে ছিল ৬ হাজার টাকা, যা পে কমিশন সাড়ে দশ হাজার টাকা করার সুপারিশ করেছিল। সেই ভাতা রাজ্য সরকার করল সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। মেডিক্যাল ভাতা ন্যূনতম ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০০ করার পরামর্শ দিয়েছিল বেতন কমিশন। রাজ্য সরকার সেটাকে আরও বাড়িয়ে করল ৫০০ টাকা। এর উর্ধ্বসীমা ২৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। টিফিন খরচ দৈনিক ন্যূনতম ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করার সুপারিশ করেছিল পে কমিশন। তা আরও বাড়িয়ে ন্যূনতম ৩০ টাকা করা হল। সর্বোচ্চ পরিমাণ ৬০ টাকা থেকে বেড়ে হল ১৮০ টাকা।
[আরও পড়ুন: ‘এতটুকুও অনুতপ্ত নই’, বাবুল নিগ্রহ কাণ্ডে মুখ খুললেন দেবাঞ্জন]
শুধু তাই নয়, গ্র্যাচুইটিতেও বিরাট স্বস্তি পেলেন রাজ্য সরকারের কর্মীরা। আগে গ্র্যাচুইটির সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল ৬ লাখ টাকা। যা বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করার সুপারিশ করে বেতন কমিশন। রাজ্য সরকার তা বাড়িয়ে ১২ লক্ষ টাকা করল। তবে, এতকিছুর মাঝেও একটি বিষয়ে হতাশ হতে হবে সরকারি কর্মীদের। বেতন কমিশন লাগু হলেও সরকারি কর্মীদের কোনও এরিয়ার দেওয়া হবে না। এরিয়ারের বিপুল আর্থিক বোঝা রাজ্য বহন করতে পারবে না বলেই জানানো হয়েছে। ২০১৫ সালের শেষ দিকে তৈরি হয় রাজ্য সরকারের এই পে কমিশন। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর অবশেষে পৌনে চার বছর বাদে বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা হয়েছে।
The post দরাজ মুখ্যমন্ত্রী, পে কমিশনের সুপারিশ উপচে সরকারি কর্মীদের বেতনবৃদ্ধির ঘোষণা appeared first on Sangbad Pratidin.