নব্যেন্দু হাজরা: ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল(এনজিটি)নির্দেশে প্রাইভেট গাড়ি বাতিল করতে গেলে কার্যত গাড়িশূন্য হয়ে যাবে রাজ্য। হিসাব বলছে, সেক্ষেত্রে রাজ্যে প্রায় ৬০ লক্ষ প্রাইভেট গাড়ি বাতিল করতে হবে। শুধু বৃহত্তর কলকাতাতেই সংখ্যাটা দাঁড়াবে ২০ লক্ষের বেশি। সেটা যে একপ্রকার অসম্ভব সে কথা জানিয়েই এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে রাজ্য।
সম্প্রতি রাজ্যকে ছ’মাসের মধ্যে পনেরো বছরের পুরনো বাণিজ্যিক এবং প্রাইভেট গাড়ি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে গ্রিন ট্রাইবুন্যাল। যে নির্দেশে চতুর্দিকে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। সকলেই মনে করছেন, তাঁর গাড়িটা বদলাতে হবে না তো! পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকরাও দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। এই নির্দেশ মানতে গেলে শহর থেকে জেলা কার্যত যে গাড়িশূন্য হয়ে পড়বে সে কথাই তথ্য দিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে জানাবে রাজ্য। একই সঙ্গে পনেরো বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ির বাতিলের ক্ষেত্রেও পরিবহণ দপ্তর কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তাও জানানো হবে।
[আরও পড়ুন: তদন্তে ‘অসহযোগিতা’, গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার অনুব্রত মণ্ডল]
পরিবহণ দপ্তরসূত্রে খবর, যে তথ্য সর্বোচ্চ আদালতে তুলে ধরা হবে তাতে বলা হচ্ছে, এমন কোনও কেন্দ্রীয় মোটর ভেহিক্যালস আইন নেই, যার দ্বারা এই ১৫ বছরের পুরনো প্রাইভেট গাড়ি বাতিল করতে পারবে দপ্তর। বরং সেখানে বলা হয়েছে, ১৫ বছর পার করলে সেই গাড়ির হাল ঠিক থাকলে তা আরও পাঁচ বছরের জন্য পুনরায় রেজিস্টার্ড করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে অবশ্য গাড়ির সিএফ এবং দূষণের মাত্রা ঠিক রাখতে হবে। তাছাড়া তথ্য দিয়ে পরিবহণ দপ্তর জানাচ্ছে, শুধুমাত্র কেএমএ এলাকাতেই ২০০০ সাল পর্যন্ত রেজিস্টার্ড প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা ২০ লক্ষ। প্রত্যেক জেলায় তা অন্তত আরও ২ লক্ষ করে হবে। তাই রাজ্যে সব মিলিয়ে সংখ্যাটা আধ কোটি হয়ে যাবে। পরবর্তী পাঁচ বছরের হিসাব ধরলে সেই সংখ্যা কোটি খানেকের আশপাশে চলে যাবে।
তবে পরিবহণ দপ্তরের তরফে জানানো হচ্ছে, ধীরে ধীরে ১৫ বছরের পুরনো সমস্ত বাণিজ্যিক গাড়ি তিন দফায় কলকাতা ও হাওড়া থেকে বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রথমে ১৯৭০-১৯৯৯ সালে প্রায় দেড় লক্ষ গাড়ি বাতিল হয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে ২০০০-২০০৪ সালে প্রায় চার লক্ষ আর তারপরে তৃতীয় দফায় বাকি গাড়িকে বাতিল করা হচ্ছে। এই গাড়ি অবশ্য ফিট থাকলে তা কেএমএ এলাকার বাইরে চালানো সম্ভব। কিন্তু গোলযোগ বাধছে ব্যক্তিগত গাড়ি বাতিল করতে গিয়ে। ২০০০ সালের হিসাবেই দেখা যাচ্ছে কী বিপুল সংখ্যক গাড়ি বাতিল করতে হবে! তা করতে গেলে গোটা পরিবহণ ব্যবস্থাটাই যে ভেঙে পড়বে তা মানছেন সকলেই। তাই গ্রিন ট্রাইবুন্যালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে।