ব্যস্ত জীবনযাত্রায় এড়িয়ে যাচ্ছেন খাবার। জানেন কী হতে পারে? ক্ষতি জানাচ্ছেন আর জি কর হাসপাতালের গ্যাসট্রোএনটেরোলজিস্ট ডা. কিংশুক ধর। শুনলেন মৌশাখী বোস।
[কানে সমস্যা? জেনে নিন সমাধানের উপায়গুলি]
খালি পেট রোগের আঁতুড়ঘর। এখনকার ব্যস্ত জীবনযাত্রায় কেরিয়ারের তাগিদে সঠিক সময়ে খাওয়া বেশ কঠিন। অন্যদিকে রোগা হওয়ার হিড়িকে না খেয়ে থাকা অনেকেরই অভ্যাস। ব্রেকফাস্ট স্কিপ করার পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ খালি পেট মানে অজান্তেই বহু জটিল অসুখকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানো। তাই
শত ব্যস্ততাতেও খেতে হবে। ভুললে চলবে না।
সরাসরি প্রভাব
দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার অভ্যাস থেকে গ্যাসের সমস্যা হয়, যা থেকে বুকে-পিঠে যন্ত্রণা কিংবা মাথার যন্ত্রণার মতো সমস্যা দেখা যায়। খালি পেটে থাকলে পিত্তথলি থেকে পিত্তরস নিঃসৃত হয়ে পেপটিক আলসার কিংবা ডিওডেনাল আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গলব্লাডারে স্টোন হওয়ার একটি বড় কারণ অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা। এই অভ্যাস থাকলে রক্তে গ্লুকোজ সাপ্লাই সঠিক পরিমাণে হয় না। ফলে লিভার ফাংশন ড্যামেজ হতে পারে।
কখন খালি পেট নয়
ডায়াবেটিসে দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে হঠাৎ রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হলে ঠিক সময়ে না খেলে মাথা ঘোরা কিংবা অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
কিডনি, হার্ট কিংবা লিভারের সমস্যার ওষুধ খেলে ও সিরোসিস অফ লিভারে অবশ্যই ঠিক মতো খেতে হবে।
অটো ইমিউন ডিজিজ থাকলে কিংবা দেহের ইমিউনিটি কম হলে যদি দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে, কোনও ভিড় এলাকায় কাজ করেন তাহলে শরীরে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেলে যদি দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকেন সেক্ষেত্রে শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হয় এবং মাথা ঘোরা, বমি হতে পারে।
যাঁদের আগে ব্রেন স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে কিংবা নার্ভের সমস্যা রয়েছে তাঁরা সময়ে, পরিমাণমতো না খেলে সমস্যা আরও জটিল হয়।
নিয়ম মেনে
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৪টি মিল নেওয়া আবশ্যক। ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, সন্ধের খাবার ও ডিনার। প্রতিটি মিলের মধ্যে ৪-৫ ঘণ্টা বিরতি রাখা প্রয়োজন। পেট ভর্তি না খেয়ে অল্প অল্প করে খান।
কতটা খাবেন?
একজন মানুষের বয়স, ওজন এবং উচ্চতার উপর তার খাবার খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে। তবে চিকিৎসকের মতে ব্রেকফাস্ট এবং লাঞ্চে তুলনামূলক ভারী খাবার রাখা ভাল। সুস্থ থাকতে সন্ধ্যায় ও ডিনারে যতটা সম্ভব হালকা খাবার খান। তবে যে কোনও মিলের বেশ কিছুক্ষণ সময় পর যদি আবার খিদে পায় তাহলে ফল কিংবা অঙ্কুরিত ছোলা বা দানাশস্য খাওয়া যেতে পারে।
ঘড়ি ধরে খান
সকাল ৭-৮ টার মধ্যে ব্রেকফাস্ট সেরে নিতে হবে। শত ব্যস্ততাতেও এটা মেনে চলুন। ব্রেকফাস্ট আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপযোগী। এটি না করে সরাসরি লাঞ্চ করলে দেহে পর্যাপ্ত এনার্জি উৎপাদন হয় না এবং দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে দেহে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। দুপুর ১২-১টার মধ্যে লাঞ্চ করে বিকেল ৫-৬ নাগাদ অল্প কিছু খান। রাত ৯-১০টায় ডিনার সেরে ফেলুন। যদিও ডিনার সম্পূর্ণ করার আদর্শ সময় হল রাত ৮-৯টার মধ্যে।
ভুলেও ভুলবেন না
ব্রেকফাস্ট স্কিপ না করে অন্তত এক গ্লাস দুধ, দুটো টোস্ট কিংবা দুধ-কর্নফ্লেক্স খান।
ব্যাগে সব সময় কিছু শুকনো খাবার রাখতে হবে। যেমন বিস্কুট, কুকিজ, বাদাম, চকোলেট।
প্রতিদিন অন্তত একটা করে ফল খান।
দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার পর কোনও তৈলাক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়।
নিয়মিত কোনও ওষুধ খেলে খাওয়ার ব্যাপারে অতিরিক্ত সচেতন হোন।
ডিনার যতটা সম্ভব হালকা এবং তাড়াতাড়ি করে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
পরামর্শে যোগাযোগ করুন এই নম্বরে :০৩৩ ২৫৫৫৭৩৯১
[একটানা মাথাব্যথায় ভুগছেন! ফাইব্রোমায়ালজিয়া নয় তো?]
The post ব্রেকফাস্টে না, জানেন কী ক্ষতি করছেন শরীরের? appeared first on Sangbad Pratidin.