অভিরূপ দাস: আধো অন্ধকারে প্রথমটায় ভেবেছিলেন বিড়ালের ল্যাজ। ভাল করে ঠাওর করতেই চক্ষু চড়কগাছ! ফিকে হলুদের উপর কালো বরফি ছাপ! এ তো মার্জার নয়। কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের (NRS Hospital) মেডিক্যাল স্টোর থেকে ধরা পরল প্রমাণ সাইজের চন্দ্রবোড়া।
হাসপাতালের কর্মীরাই সাপটাকে ধরে বোতলবন্দি করে। পরে তা তুলে দেওয়া হয় বনদপ্তরের হাতে। অভিযোগ আজকের নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একাধিক ওয়ার্ডে সাপ দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল। অনেক রোগীই জানিয়েছিলেন, রাতের দিকে কি যেন বুকে হেঁটে চলে যায়। অভিযোগ পেয়েই খবর দেওয়া হয়েছিল বনদপ্তরে। কিন্তু খাঁচা নিয়ে এসেও তাঁরা কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি। রোগীর পরিবার ভেবেছিলেন হয়তো চোখের ভুল। কিন্তু সে ভুলই ভাঙল শুক্রবার।
এদিন সকালে সুপার অফিসের অদূরে মেডিক্যাল স্টোরে আলমারির নিচে চোখ পরতেই আঁতকে ওঠেন এক কর্মচারী। তাঁর কথায়, প্রথমটায় ভেবেছিলাম দড়ি কিম্বা পাইপ জাতীয় কিছু। কিন্তু নড়াচড়া দেখেই বুঝতে পারি সর্পতে রজ্জুভ্রম।
[আরও পড়ুন: বেহালা থেকে আরামবাগ যেতে অ্যাপ ক্যাবে ভাড়া উঠল ২৪০০০ টাকা! তাজ্জব যাত্রী থেকে চালক]
দ্রুত সেই সাপটিকে বোতলবন্দি করে খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরে। বনদপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যে সাপটি ধরা হয়েছে সেটি আরও বাচ্চা দিয়ে থাকতে পারে। আর ভয়ের ব্যাপার সেখানেই। বিষধর যে সাপটি ধরা পরেছে তা রাসেল ভাইপার প্রজাতির। বাংলার যাকে চন্দ্রবোড়া বলা হয়। সবচেয়ে বিষাক্ত সাপেদের তালিকায় নাম রয়েছে এই চন্দ্রবোড়ার। তার মাত্র ৪২ মিলিগ্রাম বিষেই দফারফা হতে পারে।
সুপার অফিসের অদূরে কোত্থেকে এল এই বিষধর সাপ? হাসপাতালের আধিকারিকদের বক্তব্য, ক্যাম্পাসে যে পুকুর রয়েছে ভরা বর্ষায় তার জল টইটুম্বুর। সেখান থেকেই হয়তো উঠে আসছে সাপ। সাধারণত চন্দ্রবোড়া সাপের ফণা নেই। সর্প বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই সাপ সাধারণত ঝোপ ঝাড়ে থাকে। কী করে তা মেডিক্যাল স্টোরে উঠে এল বোঝা যাচ্ছে না। বনদপ্তরের আধিকারিকদের ধারণা, ধেড়ে ইঁদুরের উৎপাত মারাত্মক মেডিক্যাল স্টোরে তা ধরতেই হয়তো সাপ এসেছিল স্টোরে। এদিকে রোগীর পরিবারের অভিযোগ, নিয়মিত ফিনাইল, কার্বোলিক অ্যাসিড ছড়ানোর কথা থাকলেও তা করে না সাফাইকর্মীরা। আর তাতেই বাড়ছে সাপের উৎপাত।