সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দপ্তরে হাজিরার জন্য বেশ খানিকটা সময় চেয়ে নিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী। তবে আবার নতুন করে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রীকে সমন পাঠাল ইডি। ন্যাশনাল হেরাল্ড (National Herald Case) মামলায় আগামী ২১ জুলাই তাঁকে তলব করা হয়েছে।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়াকে (Sonia Gandhi) গত ৯ জুন প্রথমবার তলব করে ইডি। কিন্তু তার আগেই করোনার কবলে পড়েন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ৯ তারিখ হাজিরা দিতে পারেননি সোনিয়া। জিজ্ঞাসাবাদ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চিঠি দেন তিনি। ২৩ জুন ইডি নতুন করে সোনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের দিন ধার্য করে। কিন্তু এর মধ্যে আবার কংগ্রেস (Congress) সভানেত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতালে ভরতি করতে হয় তাঁকে। সেই সময়ই কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছ থেকে চার সপ্তাহ মতো সময় চেয়ে নিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী।
তখনই শোনা যাচ্ছিল, জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহের পর ফের তাঁকে তলব করা হতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি করেই তাঁকে সমন পাঠাল ইডি। যদিও ২১ তারিখ তিনি হাজিরা দেবেন নাকি ফের অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন জানাবেন, তা এখনও জানা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, সভানেত্রী যদি হাজিরা দেন সেদিন দেশজুড়ে আন্দোলনের পরিকল্পনা করেছে এআইসিসি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নরেন্দ্র মোদি সরকার (PM Modi) গান্ধী পরিবারকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে বলে অভিযোগ কংগ্রেস নেতৃত্বের। তাই হাজিরার দিন দলের সব সাংসদকে দিল্লিতে থাকতে হবে বলে হুইপ জারি করতে পারে কংগ্রেস। এমনিতেই সেসময় সংসদ চলবে। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগণনা। এমন একটি দিনে সোনিয়ার মতো নেত্রীকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সমন ভিন্ন রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার ইঙ্গিত বলেই মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে অনুপ্রবেশের আগে ৭-৮ বার রেইকি! বাংলাদেশেও গিয়েছিলেন হাফিজুল]
বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অভিযোগ করেন, ন্যাশানাল হেরাল্ড মারফৎ গান্ধী পরিবার ও কংগ্রেস আর্থিক দুর্নীতি করেছে। সংস্থার মাধ্যমে বিপুল আর্থিক নয়ছয় হয় বলেও অভিযোগ ছিল তাঁর। সোনিয়া ও রাহুলের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করে আদালতের দারস্ত হন। আদালতের নির্দেশে ২০১৫ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া তদন্ত ফের নতুন করে শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ও আয়কর দপ্তর। সংস্থার আমানতকারীদের ভূমিকা ও গঠন খতিয়ে দেখা শুরু করে। এপ্রিল মাসে এই মামলায় সংস্থার দুই শীর্ষ পদাধিকারী ও কংগ্রেসের শীর্ষনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে ও পবন বনশলকে দিল্লিতে জেরা করে ইডির আধিকারিকরা। যে সময় আর্থিক নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ, তখন খাগড়ে সংস্থার সিইও এবং পবন বনশল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন।
উল্লেখ্য, এই মামলায় গত মাসে একাধিকবার রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) তলব করেছিল ইডি। ৯দিনের মধ্য়ে পাঁচদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। সেই সময় হাসপাতালে ভরতি ছিলেন সোনিয়া। জিজ্ঞাসাবাদের বিরতিতে মায়ের সঙ্গে দেখাও করতে যেতেন রাহুল। তবে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পরও মাথা উঁচু করেই ইডি দপ্তর ছেড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। পরে এ নিয়ে বিজেপি সরকারকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি তিনি। বলে দেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই ইডি, সিবিআইয়ের ভয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু তাঁরা এসবে ভীত নন।