গৌতম ব্রহ্ম ও অভিরূপ দাস: সত্যজিৎ রায়ের অপুকে চাঙ্গা করে তুলতে এবার লন্ডন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের সাহায্য নিচ্ছেন বেলভিউয়ের চিকিৎসকরা। বিপদের বাইরে নেই ফেলুদা। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের (Soumitra Chatterjee) শারীরিক পরিস্থিতিতে এখন সবচেয়ে চিন্তার বিষয় তাঁর স্নায়বিক অবস্থা। আচ্ছন্ন অবস্থা কাটছেই না। চিকিৎসকেরাও হাল ছাড়তে নারাজ এবং অত্যন্ত আশাবাদীও। তাঁদের বক্তব্য, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
বেলভিউ হাসপাতালের পক্ষ থেকে সপ্তমীর দিন জানানো হয়েছে, প্রবীণ অভিনেতার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, সংকট এখনও পুরোপুরি কাটেনি। শরীরে মাঝে মাঝেই অক্সিজেন ও রক্তচাপ ওঠানামা করছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই তাঁর শরীর বেশ খানিকটা বিপদ কাটিয়ে উঠেছিল। তবে শুক্রবার থেকে স্নায়ুর সমস্যা খানিকটা বেড়ে গিয়েছে বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসার জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে চলেছেন বেলভিউয়ের চিকিৎসকেরা। ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমেই পরামর্শ নেওয়া হবে। সৌমিত্রবাবুর স্নায়ুজনিত সমস্যায় চিকিৎসকেরা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন। তবে কোনও রকম ঝুঁকি না নিতে আন্তর্জাতিক সাহায্যও নিতে চলেছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: বলিউডে পাড়ি দিচ্ছে ঋতাভরী-সোহমের ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’]
এদিন হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা সামান্য স্থিতিশীল। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক নেই। কিছুটা কমলেই রক্ত দেওয়া হচ্ছে। তাঁর রক্তচাপ এবং অক্সিজেনজনিত সমস্যা ধরা পড়েছে। তবে দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন তিনি। চিকিৎসকেরা নতুন করে কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করাতে চান তাঁর। কোভিড (CoronaVirus) পরবর্তী এক জটিল রোগে আক্রান্ত বর্ষীয়ান অভিনেতা। কোভিড ১৯-কে (COVID-19) জয় করার পর অনেক রোগীর শরীরেই এই ‘অটোইমিউন এনসেফ্যালাইটিস’ ধরা পড়ে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও আপাতত সেই রোগেই কষ্ট পাচ্ছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌমিত্রর জ্ঞান নেই বললেই চলে। সকলকে চিনতে পারছেন না তিনি। খুবই আচ্ছন্ন। চিকিৎসকদের কথাতেও কখনও কখনও সাড়া দিয়ে উঠছেন। কখনও কোনও সাড়াই পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর। গত ৬ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মিন্টো পার্ক লাগোয়া বেলভিউ হাসপাতালে ভরতি করানো হয় ৮৫ বছরের সৌমিত্রবাবুকে। এরপর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ইনটেনসিভ কেয়ারে স্থানান্তর করা হয়। তবে, দিন কয়েকের মধ্যে করোনাকে কাবু করতে পারলেও সংক্রমণের জেরে মস্তিষ্কে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। যা এখনও মেটেনি।